বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর
বাংলাদেশ ও কাতার দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার করতে আজ পাঁচটি চুক্তি ও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে।
চুক্তিগুলো হচ্ছে: বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ, বাংলাদেশ সরকার এবং কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, কাতার এবং বাংলাদেশের মধ্যে সমুদ্র পরিবহন, বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা এবং বাংলাদেশ-কাতার যৌথ ব্যবসায়িক পরিষদ প্রতিষ্ঠা।
চুক্তি ছাড়াও পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম), বন্দর (এমব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ), বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চশিক্ষা ও বৈজ্ঞানিক গবেষণা, যুব ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে এবং বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতার স্মারকও স্বাক্ষরিত হয়।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করেন।
এর আগে কাতারের আমির প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমিরকে টাইগার গেটে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান।
তাঁরা সেখানে একান্ত বৈঠকেও মিলিত হন। পরে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন।
পিএমও ত্যাগের আগে আমির টাইগার গেটে রক্ষিত দর্শণার্থী বইয়েও স্বাক্ষর করেন।
এরপর তিনি পিএমও ত্যাগ করে বঙ্গভবনে যান। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন কাতারের আমিরের সম্মানে বঙ্গভবনে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেন।
আজ সন্ধ্যায় আমির একটি বিশেষ বিমানে কাতারের উদ্দেশ্যে যাত্রা করবেন।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো.সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ আমন্ত্রণে কাতারের আমির গতকাল দু’দনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা সফরে আসেন।
চুক্তিগুলো স্বাক্ষর করেন: বাংলাদেশের পক্ষে শিল্প মন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন এবং কাতারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন হামাদ আল থানি বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে পারস্পরিক বিনিয়োগ উন্নয়ন ও সুরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
পাশাপাশি বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে আয়ের ক্ষেত্রে দ্বৈত কর পরিহার এবং রাজস্ব ফাঁকি প্রতিরোধ চুক্তিটি স্বাক্ষর করেন কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং বাংলাদেশের অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা আয়শা খান।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি বাংলাদেশ সরকার ও কাতার রাষ্ট্রের মধ্যে আইনি ক্ষেত্রে সহযোগিতার চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
কাতার চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (কিউসিসিআই) চেয়ারম্যান শেখ খলিফা বিন জসিম আল থানি এবং ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম বাংলাদেশ কাতার জয়েন্ট বিজনেস কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
সমঝোতা স্মারকগুলো স্বাক্ষর করেন:
বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে কূটনৈতিক প্রশিক্ষণে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি স্বাক্ষর করেন।পাশাপাশি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি বাংলাদেশ ও কাতারের মধ্যে শিক্ষা, উচ্চ শিক্ষা এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারকেও স্বাক্ষর করেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এবং কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি জনশক্তি কর্মসংস্থান (শ্রম) ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারকে সই করেন।
বন্দরের ক্ষেত্রে সহযোগিতায় (এমডব্লিউএএনআই কাতার এবং চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ) কাতারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সুলতান বিন সাদ আল মুরাইখি এবং নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী স্বাক্ষর করেছেন।
অনুষ্ঠানে কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির নামে রাজধানী ঢাকার একটি সড়ক ও একটি পার্কের নামকরণ করা হয়।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অধীনে মিরপুরের কালসি এলাকার বালুর মাঠে পার্কটি নির্মাণ করা হচ্ছে। মিরপুর ইসিবি চত্তর থেকে কালসি ফ্লাই ওভার পর্যন্ত সড়কটির নামকরণ করা হয়েছে কাতারের আমিরের নামে।
এখন থেকে রাস্তা ও পার্কটি শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি এভিনিউ এবং শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি পার্ক নামে পরিচিত হবে।
লন্ডনে আলতাব আলী দিবস পালিত
আনসার আহমদ উল্লাহ, লন্ডন: আলতাব আলীর স্মৃতিকে সম্মান জানিয়ে এবং বর্ণবাদ ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাঙালি সম্প্রদায়ের ঐতিহাসিক সংগ্রামকে চিহ্নিত করে বার্ষিক আলতাব আলী দিবস পালিত হয়।
পূর্ব লন্ডনের আলতাব আলী পার্কে একটি স্মারক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় গত ৪ মে সন্ধ্যা ৬টায়, যেখানে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়, কবিতা পাঠ করা হয় এবং আলতাব আলী এবং বর্ণবাদী সহিংসতার শিকার অন্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এক মিনিট নীরবতার পর, বাঙালি কমিউনিটি ও বর্ণবাদ বিরোধী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা তাদের বক্তব্যে বাঙালিদের বর্ণবাদ বিরোধী সংগ্রামের আন্দোলনকে স্মরণ করে এবং সকলকে সমতার লড়াই চালিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানায়।
১৯৭৮ সালের ৪ মে গার্মেন্টস শ্রমিক ২৪ বছরের আলতাব আলীকে হত্যা করা হয়। তিনি তার কাজ শেষ হওয়ার পরে বিকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। হোইটচ্যাপেলের এডলার স্ট্রিটে তাকে তিন বর্ণবাদী যুবক ছুরি দিয়ে আক্রমণ করে। তাকে স্থানীয় হোইটচ্যাপেল হাসপাতালে নেওয়া হলেও ডাক্তাররা তাকে মৃত গোষণা করে। এই হত্যাকাণ্ডে পর বাঙালিরা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলে।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন কালচার এন্ড রিক্রিয়েশন লিড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন । “আলতাব আলীর নির্বোধ হত্যাকাণ্ড আমাদের সম্প্রদায়কে নাড়া দিয়েছিল কিন্তু এমন একটি আন্দোলনকেও প্রজ্বলিত করেছিল যা স্তব্ধ হবে না,” ইভেন্টের হোস্ট কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন বলেন। “আজ আমরা তার স্মৃতি এবং তাদের সাহসকে সম্মান জানাই যারা বর্ণবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল এবং ‘আর নয়’ বলেছিল।”
উল্লেখযোগ্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটের স্পিকার জাহেদ চৌধুরী, ইকুয়ালিটি এন্ড সোশ্যাল ইন্ক্লুজন কাউন্সিলর সুলুক আহমেদ, কাউন্সিলর বদরুল চৌধুরী, বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডেপুটি হাইকমিশনার হযরত আলী খান, আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের আকিকুর রহমান এবং আলতাব আলী ট্রাস্টের রফিক উল্লাহ, আকলাকুর রহমান ও হালিমা ইদ্রিস, স্ট্যান্ড আপ থেকে শীলা ম্যাকগ্রেগর, জুইশ সোসালিষ্ট গ্রুপের ডেভিড রোজেনবার্গ এবং টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টারফেইথ ফোরাম থেকে সুফিয়া আলম।
পার্কের অনুষ্ঠানের পর, অংশগ্রহণকারীরা বাঙালি সম্প্রদায়ের প্রতিরোধ আন্দোলনের অন্বেষণে একটি প্রদর্শনী দেখার এবং চ্যানেল ৪ এর ডকুমেন্টারি ‘ডিফিয়েন্স’-এর স্ক্রীনিংয়ের জন্য ব্র্যাডি আর্টস সেন্টারে চলে যান। স্বাধীনতা ট্রাস্টের কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট জুলি বেগম, আলতাব আলী ফাউন্ডেশনের আকিকুর রহমান এবং ডিফিয়েন্সের সিরিজ ডিরেক্টর সতীয়েশ মনোহারাজাকে নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় । প্যানেলের সভাপতিত্ব করেন লন্ডনের কুইন মেরি ইউনিভার্সিটির ডা. লায়লী উদ্দিন।
মহান মে দিবস পালিত
প্রেসনোট ডেস্ক: বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও আজ বুধবার রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার দিন মহান মে দিবস পালিত হয়েছে।
শ্রমিক-মালিক সুসম্পর্ক, নীতি, আদর্শ বজায় রেখে বাংলাদেশের কলকারখানায় উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করে রাজধানীতে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করেছে। এবছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ, স্মার্ট হবে বাংলাদেশ।’
মহান মে দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণীতে বাংলাদেশসহ বিশ্বের শ্রমজীবী মানুষদের প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
দিবসটি উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। ঐতিহাসিক মহান মে দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী এর আগে কয়েকটি শ্রমিক পরিবারের নিকট আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর করেন। পরে তিনি বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এইচ এম ইব্রাহিম, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর তুওমো পুতিয়ানেন, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশির কবির ও জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি নূর কুতুব আলম মান্নান বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
এছাড়াও দিবসটি পালন উপলক্ষে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তর বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু এভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশের আয়োজন করে জাতীয় শ্রমিক লীগ।
জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর কুতুব আলম মান্নানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
মহান মে দিবস উপলক্ষে বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে এক আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)।
ডিইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আবদুল জলিল ভূঁইয়া, ডিইউজের সাবেক সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, বিএফইউজে’র কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদার বিষয়ে অত্যন্ত আন্তরিক। তবে সরকারের কিছু কর্মকর্তা আছেন যারা সাংবাদিকদের অধিকারের বিষয়ে উদাসীন। সাংবাদিকদের অধিকার ও মর্যাদা সুনিশ্চিত করতে অবিলম্বে টেলিভিশন ও পত্রিকায় অবিলম্বে ১০ম ওয়েজবোর্ড ঘোষণা করতে হবে।
মহান মে দিবস উদযাপন উপলক্ষে জাতীয় পত্রিকাসমূহ বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো এ দিবস উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান ও টকশো সম্প্রচার করেছে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কার্যালয়সমূহ জেলা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করা হয়। এদিকে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন সড়কদ্বীপ ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড দ্বারা সজ্জিত করা হয়েছে।
বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস-২০২৪ উপলক্ষে গার্মেন্টস শ্রমিকদের রেশনিং ব্যবস্থা চালু – অবাধ ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার নিশ্চিত করার দাবী জানিয়েছে সমাবেশে করেছে গ্রীণ বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার। পরে যৌথ উদ্যোগে লাল পতাকা মিছিল করে সংগঠনের নেতারা।
বিশ্বনাথের ইসমাইল ১৯ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে কাউন্সিলার নির্বাচিত
লন্ডন অফিস: যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ঘোষিত ফলাফলে মাত্র ১৯ বছর বয়সে স্বতন্ত্র কাউন্সিলর ব্রিটিশ বাংলাদেশি, সিলেটের বিশ্বনাথের কৃতিসন্তান ইসমাইল উদ্দীন নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন।
শুক্রবার (৪ মে) যুক্তরাজ্যের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের ঘোষিত ফলাফলে দেখা যায়, বড় দুটি রাজনৈতিক দল লেবার কনজারভেটিভসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের পেছনে ফেলে ইসমাইল অন্যতম এলাকা ব্রাডফোর্ডের বৌলিং অ্যান্ড বারকারন্ড ওয়ার্ডে নির্বাচিত হন তিনি।
বিজয়ী হওয়ার পর ইসমাইল উদ্দীন বলেন, ব্রিটেনে বয়সে কনিষ্ঠ স্বতন্ত্র কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে পেরে আমি ভোটার, তার পরিবার এবং আল্লাহপাকের কাছে কৃতজ্ঞ।
ইসমাইল উদ্দিন ২০০৪ সালের জুলাইতে ব্রাডফোর্ড শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছোটবেলা থেকেই প্রখর মেধাবী। ব্রাডফোর্ড হ্যানসন একাডেমীতে মাধ্যমিক শিক্ষার সময় ছিলেন স্কুল ক্যাপ্টেন এবং ব্রাডফোর্ড ডিকসন কলেজের ষ্টুডেন্টস ইউনিয়নের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। বর্তমানে তিনি লীডস ইউনিভার্সিটিতে পলিটিক্যাল সায়েন্স এ অধ্যয়নরত। সেখানকার মুসলিম ষ্টুডেন্ট ফেডারেশনের এক্সিকিউটিভ প্রেসিডেন্ট ইসমাইল। তিনি সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার বিশ্বনাথ পৌরসভার কারিকোনা গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী সাবেক ছাত্রনেতা জমির উদ্দিন ও গৃহিনী আসমা বেগমের এর ১ম পুত্র। ৪ বোন ও ২ ভাইয়ের মধ্যে সে ২য়। ইসমাইল উদ্দিন এর দাদা মরহুম হাজী ছনই মিয়া ছিলেন বিশ্বনাথের প্রতিষ্ঠিত একজন ব্যবসায়ী।
মিডল্যান্ডে এফবিসিসিআই’র পরিচালক ইশহাকুল হোসেন সুইটকে সংবর্ধনা
লন্ডন অফিস: দক্ষিণ সুরমা মিডল্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জমিরুল ইসলাম সিরাজের উদ্যেগে সিলেট ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ড্রাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)’র পরিচালক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সিলেট দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কৃতিসন্তান মোহাম্মদ ইশহাকুল হোসেন সুইটকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়।
মঙ্গলবার ৭ মে মিডল্যান্ডের স্টাফোর্ডশায়ারের ট্যামওয়ার্থের ঐতিহ্যবাহী জালালী রেস্টুরেন্টে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জামিরুল ইসলাম সিরাজের সভাপতিত্বে সভার সঞ্চালনা করেন দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতির যুগ্ন আহ্বায়ক কয়েছ চৌধুরী।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে আগত অতিথিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন সর্বইউরোপ বঙ্গবন্ধু পরিষদের জয়েন্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ মুজিব হোসেন।
সংবর্ধিত অতিথি ইশহাকুল হোসেন সুইট অনুষ্ঠান আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে সকল প্রবাসীদের দেশে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। তিনি বর্তমান সরকারের উন্নয়ন অগ্রগতির প্রশংসা করেন বলেন, অনেক প্রতিকূলতা প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে দেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের দিকে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে, বাংলাদেশ আগামী ২০৩০ সালের অর্থনীতি হবে বিশ্বের ১০ তম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন কভেন্টি সিটি আওয়ামী লীগের সভাপতি মকদ্দস আলী, কমিউনিটি নেতা আশিক আলী, সেলিব্রেটি আব্দুস সালাম, সাংবাদিক রায়হান তালুকদার, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ডক্টর মিসবাউর রহমান মিছবাহ, জেএমজি কার্গোর সত্ত্বাধিকারী মনির মিয়া, দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতির আহবায়ক আকিকুর রহমান আকিক ও যুগ্ম আহ্বায়ক আখতার হোসেন, মাসুম ট্রাভেলস এর সত্বাধিকারী তুহিনুর ইসলাম, হাজী মহর্রম আলী, হাজী তাজর আলী, জয়েন্ট সেক্রেটারি বাদশা মিয়া, কমিউনিটি নেতা কফিল উদ্দিন, লাল ভেলি রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী আবুল মিয়া, শাহজালাল ট্রাভেলসের আনার মিয়া, মোজামিল খান, রইস আলী, কভেন্টি সিটি আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মুকিত চৌধুরী, খেলাফত মজলিসের সৈয়দ কবির আহমদ, মুফতি তাজুল ইসলাম, মৌলানা সাব্বির আহমদ, একাউন্টেন্ট মাসুদ মিয়া, শিক্ষক আমজাদ হোসেন, বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ব্যবসায়ী কাবুল মিয়া, ছাত্রলীগের সাবেক নেতা সিরন চৌধুরী, সাহেদা খানম বাবলি ও জীবন আহমেদ।
মানুষকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বহুমাত্রিক কর্মসূচি হাতে নিয়ে প্রত্যেক মানুষকে আর্থিকভাবে স্বচ্ছল করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি।’
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দরিয়ারকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি সংক্ষিপ্তভাবে বহুমাত্রিক কর্মসূচির বর্ণনা দেন, যার মধ্যে রয়েছে ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’, জনগণকে আর্থিক অনুদান প্রদান, সার্বজনীন পেনশন প্রকল্প এবং গ্যারান্টি ছাড়া ঋণ প্রদান, সমাজ থেকে দারিদ্র্য বিমোচন করার জন্য যুবকদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি।
সরকার প্রধান বলেন, আমরা দারিদ্র্য বিমোচনের মাধ্যমে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের নেয়া কর্মসূচিগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হলে দেশে কেউ গরীব থাকবে না।
তিনি ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিশ্চিত করতে এবং এইভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে সহায়তা করার জন্য সমগ্র বাংলাদেশে সমবায় সমিতি গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
প্রতিটি এলাকায় সমবায় সমিতি গঠন করে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি, ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণে আওয়ামী লীগ নেতাদের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সবাই যাতে নিজের পাঁয়ে দাঁড়াতে পারে, সে জন্য আমরা কাজ করছি।’
পরে প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় চত্বরে দরিদ্রদের মাঝে রিপার মেশিন, সার, ল্যাপটপ, ১০টি সাইকেল, ১০টি রিকশা ভ্যান, ৩০টি সেলাই মেশিন এবং ৩৮ জনকে ৪০ হাজার টাকার আর্থিক অনুদান, ১০ জোড়া কবুতর এবং ৩৮ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতার কনিষ্ঠ কন্যা ও প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানা।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম।
সুবিধাভোগীরা তাদের সরঞ্জাম এবং আর্থিক অনুদান পাওয়ার নিজস্ব অনুভূতি ব্যক্ত করেন।
দরিয়াকুল গ্রাম উন্নয়ন সমিতির উপদেষ্টা শেখ হাসিনা সমবায় পুনরুজ্জীবিত করার উদ্যোগের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে আত্মনির্ভরশীল করতে সারা বাংলাদেশে সমবায় গঠনের ধারণা ছড়িয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
শেখ হাসিনার দেওয়া ৯ দশমিক ০৫ একর জমিতে গড়ে উঠেছে দরিয়াকুল সমবায় সমিতি।
প্রধানমন্ত্রী সমবায়ের মাধ্যমে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, সমবায় ব্যবস্থায় জমির মালিকানা পরিবর্তন হবে না এবং ফসলকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি ফসলের একটি অংশ মালিক, কৃষকরা একটি অংশ এবং সমবায়ের কাছে একটি অংশ যায়।
প্রধানমন্ত্রী অন্যের ওপর নির্ভরতা কমাতে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, তাঁর সরকার দেশবাসীর নিরাপদ ভবিষ্যত জীবনের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কীমের উদ্যোগ নিয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন,‘আমরা শুধুমাত্র বর্তমানের জন্য নয়, ভবিষ্যতের জন্যও কাজ করছি। সর্বজনীন পেনশন স্কীমের সুবিধাভোগীদের ভবিষ্যত জীবন সুরক্ষিত করবে।’
শেখ হাসিনা তাঁর দলের নেতাকর্মীদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে তাদের নাম সর্বজনীন পেনশন স্কীমে অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ রক্ষায় তাঁর দলের বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বর্ষাকালে দলের প্রত্যেক সদস্যকে অন্তত তিনটি করে গাছের চারা লাগানোর আহ্বান জানান।
টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছার পরপরই শেখ হাসিনা তাঁর বোন শেখ রেহানা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শহীদ তাঁর পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের জন্যও দোয়া করেন।