বাংলাদেশের সাথে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে আগ্রহ প্রকাশ ব্রাজিলের


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: ব্রাজিলের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল গালিপোলো বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে একটি বাণিজ্য চুক্তির আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার ব্রাজিলে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মো. তৌহিদুল ইসলামের সাথে অনুষ্ঠিত প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকের পর তিনি ব্রাজিলের এ আগ্রহের কথা জানান বলে আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।
রাষ্ট্রদূত জানান, দু’দেশের মধ্যে বর্তমান বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ চার বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে। সাম্প্রতিক বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের উভয় দেশের ওপর আরোপিতব্য উচ্চ ট্যারিফের কারণে একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সমঝোতার যুক্তিসমূহ রাষ্ট্রদূত বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। তিনি উভয় দেশের পারস্পরিক আরোপিত ট্যারিফ কমিয়ে আনা, ব্যাংকে এলসি খোলার সমস্যা সমাধানসহ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য সম্ভাব্য একটি বাণিজ্য চুক্তির রূপরেখা প্রণয়নে একটি ধারনাপত্র উপস্থাপন করেন।
এ প্রেক্ষিতে প্রেসিডেন্ট গ্যাব্রিয়েল শিগগিরই ব্রাজিলের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে একটি বাণিজ্য চুক্তির সমঝোতা স্মারকের খসড়া পাঠাবেন বলে জানান। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছর ঢাকায় অনুষ্ঠেয় ব্রাজিল-বাংলাদেশ বাৎসরিক দ্বি-পক্ষীয় বৈঠকে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য নিঃসন্দেহে একটি ঐতিহাসিক সুযোগ। বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য সংকোচনের প্রেক্ষাপটে এলডিসি পরবর্তী বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ ব্রাজিলের এগিয়ে আসা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি অনন্যসাধারণ সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে।
১৯ অক্টোবর ১৬তম লন্ডন বাংলা বইমেলা


প্রেসনোট ডেস্ক রিপোর্ট: চ্যাডওয়েল হীথের মে ফেয়ার হলে আগামী ১৯ অক্টোবর, রোববার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ১৬তম লন্ডন বাংলা বইমেলা। সকাল ১২টা থেকে শুরু হয়ে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত চলবে এ আয়োজন।
বইমেলায় থাকবে বাংলাদেশের খ্যাতনামা লেখকদের বই ও বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার বিভিন্ন প্রকাশনা। পাশাপাশি থাকছে নানা ধরনের স্টল, খাবারের স্টল এবং শিশুদের জন্য বিশেষ আয়োজন—নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি ও ছড়াপাঠের অনুষ্ঠান। মহিলাদেরও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
গতকাল ব্রাডি আর্টস সেন্টারে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বইমেলার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন উদীচি যুক্তরাজ্যের সভাপতি ও বইমেলা সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক গোলাম মোস্তফা। তিনি বইমেলাকে সফল করার আহ্বান জানান। সভায় উপস্থিত ছিলেন কমিটির সদস্যরা—মিছবাহ জামাল, গোলাম কবির, মুজিবুল হক মনি, তৌফিক রহমান, মলি ফূয়াদ, সাহেল জাহান শিবলী, সেলিনা চৌধুরী শেলী, রুমা জাফর, ফারহানা ইসলাম মাধবী, মনজু আরা খাতুন, আরমান আলি, হীরা কান্চন হীরক, কিশোয়ার মুনিয়া, ফজলুল হক, মনির হোসেন ও বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল দেওয়ানসহ অনেকে। তারা সবাই বইমেলাকে সাফল্যমণ্ডিত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
আয়োজক গোলাম মোস্তফা জানান, সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট থেকে বইমেলার সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে মঞ্চে উঠবেন বাংলাদেশের জীবন্ত কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন এবং ভারতের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী মৌসুমি ভৌমিক।
বইমেলা সমন্বয় কমিটি এই অনন্য আয়োজনকে সফল করতে উপস্থিত থাকার জন্যে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
পাকিস্তান আফগানিস্তান সংঘর্ষ: ২০০ জন নিহত


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান সেনাবাহিনী আজ রোববার জানিয়েছে, রাতভর সীমান্ত সংঘর্ষে আফগানিস্তানের তালেবান ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ২০০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এসময় নিজেদের ২৩ জন সৈন্য নিহত হয়েছে বলেও স্বীকার করে পাকিস্তান।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তালেবান শিবির, চেকপোস্ট এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে গুলিবর্ষণ এবং হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসময় আমাদের ২৩ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন। অন্যদিকে, তালেবান ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ২ শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’কে হত্যা করা হয়েছে।
সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না


প্রেসনোট ডেস্ক রিপোর্ট: বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন সুষ্ঠু নির্বাচনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার ষড়যন্ত্রে জনগণ বিভ্রান্ত হবে না। শনিবার সকালে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব)-এর শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সংগঠনের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম তুহিনসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
রিজভী বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হবে-এটাই জনগণের প্রত্যাশা। তারা ভোট দিতে প্রস্তুত। তাই নতুন কোন ইস্যু তৈরি করে জনমতকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করলে জনগণের কাছে ধরা পড়বেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘গত ১৬ বছর জনগণ ভোট দিতে পারেনি। শেখ হাসিনা ভোটে তালা ঝুলিয়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছেন। গরু-বাছুরকে ভোটকেন্দ্রে যেতে দেখা গেছে, কিন্তু ভোটারদের যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। দিনের ভোট রাতে পরিণত হয়েছে। র্যাব, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ দিয়ে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়া ঠেকানো হয়েছে।’
বিএনপির এই মুখপাত্র আরও বলেন, এবারের নির্বাচন কমিশন এবং ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারই নিশ্চিত করবে জনগণের ভোটাধিকার। কারণ এই সরকার নিরপেক্ষ থাকবে।
তবে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বিশেষ একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের সমর্থক আমলাদের বসানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।
তিনি বলেন, ড. ইউনূসের প্রতি আস্থা রেখে বলছি, এমন ব্যক্তিদের দায়িত্ব দিন যারা নিরপেক্ষভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবেন।
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা আরও বলেন, শেখ হাসিনা দলীয় নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন ব্যবহার করে দেশে একদলীয় ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছিল। তাই জনগণ নতুন আরেকটি ফ্যাসিবাদের শাসন দেখতে চায় না।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারাবাহিকতা স্মরণ ধরে তিনি বলেন, ‘বিএনপি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হাত ধরে একদলীয় দুঃশাসন থেকে জাতিকে মুক্ত করেছে।
এরপর বেগম খালেদা জিয়া স্বৈরাচার এরশাদকে পরাজিত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আর ৫ আগস্টের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তারেক রহমান জাতিকে নতুন করে অনুপ্রাণিত করেছেন।’
আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক সাম্রাজ্যবাদী ও আধিপত্যবাদীরা নানা চক্রান্ত করছে। তা বাস্তবায়নের জন্য মাস্টারপ্ল্যানও চলছে। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সব অন্ধকার দূর করে জাতীয়তাবাদের পতাকা উঁচু রাখবে।
দুর্গাপূজা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ বছরও হিন্দু-মুসলমান সবাই মিলে মণ্ডপ পাহারা দিয়েছে। এটাই আমাদের সম্প্রীতির ঐতিহ্য।
ভারতে ড. ইউনূসের মুখাবয়বের আদলে তৈরি অসুরের মূর্তির সমালোচনা করে রিজভী বলেন, এটি অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয় ও অপসংস্কৃতির প্রকাশ। মোদি সরকার যদি ভারতে মধ্যযুগীয় অন্ধকার নামিয়ে আনেন আমরা সেটি গ্রহণ করবো না। কিন্তু এ নিয়ে আমাদের দেশে বিভাজন তৈরি করা যাবে না। তারেক রহমান সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, আমরা সম্প্রীতির বন্ধনে আবদ্ধ থাকবো।
পাঁচ দিনব্যাপী ‘বিসিক শরৎ মেলা-২০২৫’ শুরু


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যসামগ্রীর পরিচিতি, বিপণন এবং বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) কার্যালয়ে ‘বিসিক শরৎ মেলা-২০২৫’ শুরু হয়েছে। আজ রোববার রাজধানীর তেজগাঁও শিল্প এলাকায় বিসিক ভবনে পাঁচ দিনব্যাপী মেলার উদ্বোধন করেন বিসিক চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্রেতা-দর্শনার্থীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। আগামী ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত চলা এ মেলায় কোন প্রবেশ ফি নেই। ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যের সমারোহে রঙিন হয়ে উঠেছে মেলায় পুরো প্রাঙ্গণ। বস্ত্র, মৃৎ, পাট, পুতুল, ব্লক, বাটিক, চামড়া, গহনা, সূচি, বাঁশ-বেতসহ নানান হস্ত ও কুটির শিল্পপণ্যের মোট ৪৩টি স্টল মেলায় স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে উদ্যোক্তাদের জন্য ৪০টি, বিসিক নকশা কেন্দ্রের জন্য ২টি এবং নকশা কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের জন্য ১টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিসিক নকশা কেন্দ্র ও বিসিকের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত উদ্যোক্তাদের তৈরি পণ্যসামগ্রীর পরিচিতি, বিপণন এবং বাজার সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রতিবছরই বিসিক এ ধরনের মেলার আয়োজন করে থাকে।
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যেকর্মী নিয়োগে চুক্তি স্বাক্ষর


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে সাধারণ কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি আজ সোমবার রিয়াদে স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তিকে দুই দেশের মধ্যে শ্রমবাজার সম্প্রসারণ ও অভিবাসন ব্যবস্থার ইতিহাসে এক নতুন মাইলফলক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল এবং সৌদি আরব সরকারের পক্ষে মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন বলে আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছরের ইতিহাসে এটাই প্রথমবারের মতো সাধারণ কর্মী নিয়োগ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক চুক্তি। এর আগে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে কর্মী পাঠানো হতো অনানুষ্ঠানিকভাবে। ১৯৭৬ সালে প্রথম বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে শ্রমিক পাঠানো শুরু হয়। তখন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৩০ লাখের বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরবে কাজ করছেন, যা বাংলাদেশের রেমিট্যান্স প্রবাহের সবচেয়ে বড় উৎস হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
এর আগে, ২০১৫ সালে গৃহকর্মী নিয়োগ এবং ২০২২ সালে দক্ষতা যাচাই ও স্বীকৃতি সংক্রান্ত দুটি বিশেষ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তবে সাধারণ কর্মী নিয়োগে এটিই প্রথম আনুষ্ঠানিক চুক্তি, যা প্রবাসী কর্মীদের অধিকার ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার দিক থেকে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে এখন বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে দক্ষ, আধা-দক্ষ ও সাধারণ শ্রমিক পাঠানোর সুযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। দুই দেশের যৌথ উদ্যোগে প্রশিক্ষণ, দক্ষতা যাচাই, নিরাপদ অভিবাসন ও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিতের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি নিয়োগকর্তা ও কর্মীর মধ্যে চুক্তিভিত্তিক সম্পর্ক, আকামা নবায়ন, এবং সময়মতো এক্সিট ভিসা প্রদানের বিষয়গুলো আরও সুনির্দিষ্টভাবে বাস্তবায়িত হবে।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ড. আসিফ নজরুল সৌদি কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান, যেন কর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত থাকে, আকামা নবায়নের দায়িত্ব নিয়োগকর্তারা যথাযথভাবে পালন করে এবং দেশে ফেরত যেতে ইচ্ছুক কর্মীরা যেন দ্রুত এক্সিট ভিসা পায়।
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে দক্ষ কর্মী প্রেরণের আগে আমরা প্রশিক্ষণ ও স্কিল সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করব। এর মাধ্যমে সৌদি আরব আরও গুণগত শ্রমশক্তি পাবে।’
জবাবে সৌদি মানবসম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার আহমেদ বিন সোলাইমান আল-রাজী বলেন, ‘বাংলাদেশ আমাদের এক গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার অংশীদার। এই চুক্তি শুধু নিয়োগ নয়, মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রেও এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।’
তিনি কর্মী কল্যাণ, দক্ষতা উন্নয়ন, এবং আইনি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে উভয় দেশের মন্ত্রণালয়কে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও বাংলাদেশে সৌদি বিনিয়োগে প্রশিক্ষণকেন্দ্র স্থাপন, কর্মী নিয়োগে ডিজিটাল যাচাইকরণ ব্যবস্থা চালু, নারী কর্মীদের সুরক্ষা এবং অবৈধ দালাল চক্র দমনে যৌথ মনিটরিং সিস্টেম গড়ে তোলার বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. দেলওয়ার হোসেন, মিশন উপপ্রধান এস. এম. নাজমুল হাসান, শ্রম কাউন্সেলর মুহাম্মাদ রেজায়ে রাব্বী, সৌদি মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই চুক্তি কার্যকর হলে সৌদি আরবে বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা আগামী দুই বছরের মধ্যে অন্তত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে সৌদি আরবে প্রায় ২৭ লাখ বাংলাদেশি কর্মরত আছেন, যারা বছরে প্রায় ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠান।
চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীরা দক্ষতা অনুযায়ী ভালো বেতন, উন্নত কর্মপরিবেশ, চিকিৎসা ও আবাসন সুবিধা পাবেন। একই সঙ্গে কর্মীদের জন্য একটি যৌথ অনলাইন ডেটা প্ল্যাটফর্ম তৈরি করা হবে, যেখানে নিয়োগ ও কর্মচুক্তির তথ্য সংরক্ষিত থাকবে।
এই ঐতিহাসিক চুক্তিকে কেন্দ্র করে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে আশা করছে বাংলাদেশ সরকার। প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, ‘দক্ষ কর্মী রপ্তানি শুধু রেমিট্যান্স বাড়াবে না, এটি বাংলাদেশের বৈদেশিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল করবে।’