দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইউকের উদ্যোগে রমজানের ফুড প্যাকেট বিতরণ


লন্ডন অফিস: প্রতিবারের ন্যায় ধারাবাহিকভাবে এবারও দক্ষিণ সুরমা সমাজ কল্যাণ সমিতি ইউকের সৌজন্যে দক্ষিণ সুরমার ৮টি ইউনিয়ন ও সিটি কর্পোরেশনের ৯টি ওয়ার্ডের প্রায় সহস্রাধিক পরবিবারে মধ্যে রমজান মাসের খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।
১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার জালালপুর কলেজে ফুড প্যাকেট বিতরণ উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বিশিষ্ট মুরব্বি ও অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মুক্তার আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সুইন্ডন কাউন্সিলের সাবের মেয়র কাউন্সিলর জুনাব আলী।
বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন উপদেষ্টা আব্দুল আহাদ, সিনিয়র সদস্য আব্দুল হক আবু, ক্রীড়া সম্পাদক শিবলী আহমদ এবং কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। অনুষ্ঠান পরিচালনায় ছিলেন ফাহিম আহমদ এবং পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন আল মারজান।
হবিগঞ্জ: আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে উভয় পক্ষের আহত হয়েছেন অন্তত অর্ধশতাধিক ব্যক্তি।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) সকালে আজমিরীগঞ্জের নোয়াগড় গ্রামে ঘণ্টাব্যাপী এই সংঘর্ষ হয়।
স্থানীয়রা জানান, নোয়াগড় গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শাহজাহান মেম্বার ও আক্তার মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এর জের ধরে আজ সকালে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে জড়ায়।
এতে উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশত লোক আহত হয়েছে। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সংঘর্ষে ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এটি এম মাহিদুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রবাসীদের ভিআইপি মর্যাদা দেব বিমানবন্দরে: প্রধান উপদেষ্টা


অনুপম নিউজ ডেস্ক: প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রবাসীদের সহযোগিতার কারণে বাংলাদেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি আবার ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম হয়েছে।
এ সময় বিমানবন্দরে প্রবাসীদের জন্য সেবা আরও সহজ করার প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বিমানবন্দরে প্রবাসীদের ভিআইপি মর্যাদায় সেবা প্রদান করা হবে।প্রবাসীদের দেশে আসা-যাওয়া যেন শান্তিপূর্ণ ও আনন্দদায়ক হয়, আমরা সেই ব্যবস্থা করব।’
বৃহস্পতিবার কাতারের রাজধানী দোহায় প্রবাসী বাংলাদেশিদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত ভঙ্গুর অর্থনীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রবাসীদের উদ্দেশে ড. ইউনূস বলেন, ‘আমরা আজ যে শক্ত হয়ে দাঁড়াতে পেরেছি তার মূলে আপনারা। আপনারা সহযোগিতা না করলে আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারতাম না। আপনারা কখনো আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন ভাববেন না।’
বিমানে পণ্য পরিবহণের ক্ষেত্রে কার্গো ভাড়া কমানোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা। এর জবাবে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিমান পরিবহণ দ্রুত করা এবং কার্গো ভাড়া কমানোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। ঢাকা বিমানবন্দর ছাড়াও চট্টগ্রাম ও সিলেট বিমানবন্দর থেকে কিভাবে সহজে পণ্য পরিবহণ করা যায়, তা নিয়েও আমরা কাজ করছি।’
তিনি বলেন, সাধারণত যাত্রী পরিবহণকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। তবে এখন আমরা বিমানে পণ্য পরিবহণকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছি।
প্রধান উপদেষ্টা জানান, পাসপোর্টসহ সব ধরনের সেবা অনলাইন করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সরকারকে পরামর্শ দিতে তিনি প্রবাসীদের প্রতি আহ্বান জানান।
মতবিনিময় সভায় পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজিবিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, কাতারে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক মেয়র লিটন ও তার স্ত্রী-কন্যার বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন ও তার স্ত্রী সন্তানের বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মঙ্গলবার বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক প্রতিরোধ আক্তার হোসেন। তিনি বলেন, তাদের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ছাড়াও বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্দেহজনক লেনদেন করার অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন জানান, রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, মেয়র থাকা অবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধভাবে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ৩০৪ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন।
এছাড়াও তার নিজ নামের ১২টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৫২ কোটি ২৩ লাখ ১৭ হাজার ২৫১ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
এসব টাকা জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অপরদিকে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের স্ত্রী শাহীন আকতার স্বামীর সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ১১ কোটি ৪১ লাখ ৬২ হাজার ২৪৫ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন।
এছাড়াও তার নামে থাকা ১৩টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৭৬ কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৮০২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। তিনি এসব টাকা জ্ঞাতসারে হস্তান্তর, স্থানান্তর ও রূপান্তর করায় শাহীন আকতার ও স্বামী এএইচএম খায়রুজ্জামানের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অন্যদিকে এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে আনিকা ফারিহা জামান পিতার সহযোগিতায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে ঘুষ ও দুর্নীতির মাধ্যমে ৬ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৭৮১ টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেন।
তার নামে থাকা ৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে আরও ২ কোটি ৪৪ লাখ ৮১ হাজার ৫৭৮ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন। এ মামলাতেও আনিকা ছাড়াও তার পিতা এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনকে আসামি করা হয়েছে।
জাপানকে হটিয়ে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনীতি এখন ক্যালিফোর্নিয়া


প্রেসনোট আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতি জাপানকে ছাড়িয়েছে; তাতে মার্কিন অঙ্গরাজ্যটি এখন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি হয়ে উঠেছে।
বিবিসি লিখেছে, গভর্নর গ্যাভিন নিউসম আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এবং ইউএস ব্যুরো অব ইকোনমিক অ্যানালাইসিসের নতুন তথ্য তুলে ধরে ক্যালিফোর্নিয়ার প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছেন।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) ৪ দশমিক ১০ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যেখানে জাপানে এর পরিমাণ ৪ দশমিক ০১ ট্রিলিয়ন ডলার। মার্কিন অঙ্গরাজ্যটি এখন কেবল জার্মানি, চীন এবং সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে রয়েছে।
নিউসমের ভাষ্য, “ক্যালিফোর্নিয়া কেবল বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলছে না – আমরা গতিপথ ঠিক করছি।”
বিবিসি লিখেছে, নতুন ওই পরিসংখ্যান এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো, যখন গভর্নর নিউসম মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন এবং ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে শিল্প ও কৃষি উত্পাদনে ক্যালিফোর্নিয়ার বড় হিস্যা রয়েছে। তাছাড়া এটি প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন ও বিশ্বের বিনোদন শিল্পের কেন্দ্র। যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম দুই সমুদ্র বন্দরেরও অবস্থান সেখানে।
ট্রাম্পের যে নীতির কারণে বৈশ্বিক বাজার ও বাণিজ্যে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে, সেই শুল্কনীতি আরোপের ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করে একটি মামলা করেছেন বিশিষ্ট ডেমোক্রেটিক ও ২০২৮ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী নিউসম।
বিবিসি লিখেছে, উচ্চ শুল্কের ওপর ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা পণ্যে প্রায় সব দেশের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন।
মেক্সিকো ও কানাডার ওপর বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। আর চীনের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির সঙ্গে ‘সর্বাত্মক বাণিজ্য যুদ্ধ’ শুরু হয়েছে।
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে আসা চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করেছেন এবং তার পাল্টায় মার্কিন পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে চীন।
ট্রাম্প প্রশাসন গত সপ্তাহে বলেছিল, বিদ্যমান শুল্কের সঙ্গে নতুন শুল্ক যুক্ত হলে কিছু চীনা পণ্যের উপর শুল্ক ২৪৫ শতাংশে পৌঁছাতে পারে।
নিজের অঙ্গরাজ্যের অর্থনীতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন নিউসম।
“আমরা যখন এই সাফল্য উদযাপন করছি, তখন বর্তমান ফেডারেল প্রশাসনের বেপরোয়া শুল্ক নীতির কারণে আমাদের অগ্রগতি হুমকির মুখে রয়েছে।
“ক্যালিফোর্নিয়ার অর্থনীতি জাতিকে শক্তি যোগায় এবং এটিকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।”
ট্রাম্প যুক্তি দেখিয়েছেন, তার বাণিজ্য যুদ্ধ বছরের পর বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে কর আরোপের পরে কেবল ‘খেলার মাঠকে সমান’ করছে।
ট্রাম্প তার বাণিজ্যযুদ্ধকে এমনভাবে তুলে ধরছেন যে- যুক্তরাষ্ট্রের উপর বছরের পর বছর ধরে যে শুল্ক আরোপ হয়েছে, সেটিতে যৌক্তিক অবস্থায় নেওয়া।
বিবিসি লিখেছে, যুক্তরাষ্ট্রে কারখানা স্থাপন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিকে উৎসাহিত করতেই এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। এটি তার অর্থনৈতিক কার্যপ্রণালীর একটি প্রধান খুঁটি, সেই সঙ্গে সুদের হার কমাতে চান তিনি, যাতে করে আমেরিকানদের ঋণের ব্যয় কমে।
নতুন তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের জিডিপি ২৯ দশমিক ১৮ ট্রিলিয়ন ডলার, চীনের ১৮ দশমিক ৭৪ ট্রিলিয়ন ডলার এবং জার্মানির ৪ দশমিক ৬৫ ট্রিলিয়ন ডলারের পেছনেই রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া। ওই দেশগুলোর তুলনায় ক্যালিফোর্নিয়ার প্রবৃদ্ধি যে বেশি তাও পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে।
জন্মহার হ্রাস ও বয়স্ক মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জাপানের অর্থনীতি চাপে রয়েছে; তাতে শ্রমশক্তি সংকুচিত হচ্ছে এবং সামাজিক সেবার খরচ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
চলতি সপ্তাহে আইএমএফের পূর্বাভাসে জাপানের প্রবৃদ্ধি আরও কমানো হয়েছে। সংস্থাটির ধারণা, শুল্ক বৃদ্ধির প্রভাবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারণার চাইতেও ধীরে সুদের হার বাড়াবে।
আগে মন্ত্রণালয় থেকে ফোন আসত কার জামিন হবে কারটা হবে না


অনুপম নিউজ ডেস্ক: অধস্তন আদালতের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধান রাষ্ট্রপতির ওপর ন্যস্ত সংক্রান্ত সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ এবং বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি মুলতুবি করেছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার শুনানিতে রিটকারী আইনজীবী শিশির মনির বলেছেন, সুপ্রিমকোর্টের বাজেট থেকে টাকা বাঁচিয়ে আদালতে কম্পিউটার কিনে দিতে হচ্ছে। কারণ, অধস্তন আদালতের বিচারকরা হাতে সাক্ষীর জবানবন্দি লিখেন। কিন্তু আইন মন্ত্রণালয় সেটা করে না। তারা ফোন করে ভয় দেখায়। তারা সিএমএমকে (মুখ্য মহানগর হাকিম) নির্দেশনা দেয় কাকে জামিন দিতে হবে, কাকে জামিন দেওয়া যাবে না।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ঢাকার আদালতে একজন সাক্ষীর (সজীব ওয়াজেদ জয়) সাক্ষ্যগ্রহনের প্রসঙ্গ টেনে শিশির মনির বলেন, তিনি সাক্ষ্য দিতে গিয়েছিলেন নিু আদালতে। সাক্ষ্য প্রদান শেষে বিচারক (অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূর) এজলাস থেকে নেমে সাক্ষীর মান যেন ক্ষুণ্ন না হয়, সেজন্য তাকে গাড়ি পর্যন্ত এগিয়ে দিয়ে যান। কারণ, তিনি বিরাট সাক্ষী। এভাবে অধস্তন আদালতকে নিয়ন্ত্রণ করা হতো।
তিনি বলেন, যতদিন সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ থাকবে, ততদিন স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা এবং পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠার পথে বাধা থাকবে। এটা চ্যালেঞ্জ করেছি। আমরা অরিজিনাল সংবিধানের বিধান প্রতিস্থাপন চেয়েছি। যেখানে সবকিছু সুপ্রিমকোর্টের ওপর ছিল। অতি দ্রুত পৃথক সচিবালয় চেয়েছি।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি আহমেদ সোহেল ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতুবি করা হয়। আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। অ্যামিকাস কিউরি সিনিয়র অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া।
শুনানিতে আইনজীবী শিশির মনিরের কাছে আদালত জানতে চান কেন পৃথক সচিবালয় দরকার। জবাবে আইনজীবী শিশির মনির অধস্তন আদালতের বিচারকদের ওপর আইন মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন খবরদারির তথ্য তুলে ধরেন। এছাড়া অধস্তন আদালতের বিচারকদেরও বিভিন্ন অনিয়ম উল্লেখ করেন তিনি।
সংবিধানের ২২, ১০৭ ও ১০৯ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগের পৃথক্করণের কথা বলা হয়েছে। আদালতগুলোর ওপর তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণে হাইকোর্ট বিভাগের ক্ষমতার কথা বলা হয়েছে ১০৯ অনুচ্ছেদে। আর ১০৭ অনুচ্ছেদে রয়েছে আদালতের রীতি ও পদ্ধতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধিগুলো প্রণয়নের ক্ষমতা। সবসময় সুপ্রিমকোর্টের সুপারভিশনে প্র্যাকটিস ডাইরেকশন জারি করা হয়।
যেমন: আইনজীবীদের পোশাক পরিবর্তন করা হয়। এটা কীভাবে হয়? এটা ১০৭ অনুচ্ছেদের অধীনে করা হয়। এরপর হাইকোর্টের বিচারপতিদের ভাগ করে দেওয়া হয়েছে, কে কোন বিভাগে যাবে (অধস্তন আদালত মনিটরিং)। এটা ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে হয়।
এ নিয়ে শিশির মনির বলেন, মাঝেমধ্যে আমাদের প্রধান বিচারপতি বলেন যে, আমরা দ্বৈত শাসনের মধ্যে আছি। এ দ্বৈত শাসনটা কেমন? আপনারা (হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি) অধস্তন আদালত ভিজিট করে অনিয়ম-নিয়ম দেখার সুযোগ পাচ্ছেন, এসে রিপোর্ট করছেন, কিন্তু আপনারা কোনো ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস ইস্যু করতে পারছেন না। কারণ, ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস ইস্যু করতে যেতে হবে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের (আইন মন্ত্রণালয়) কাছে।
সুপ্রিমকোর্ট এটা (ডিসিপ্লিনারি প্রসিডিংস) ইনিশিয়েট করতে পারে না। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ সুপ্রিমকোর্টের কাছে পরামর্শের জন্য পাঠায়। অথচ অধস্তন আদালতের তত্ত্বাবধানের দায়িত্ব সুপ্রিমকোর্টের। সে জায়াগায় শুধু সার্কুলার ইস্যু করে তাদের (অধস্তন আদালতের) দেখভাল করার দায়িত্ব পালন করছে সুপ্রিমকোর্ট।
শুনানির একপর্যায়ে শিশির মনির আরও বলেন, অনিয়ম-দুর্নীতি দেখার পর আর সুপ্রিমকোর্ট কিছু করতে পারছে না। তখন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ (আইন মন্ত্রণালয়) দরকার। যখন বদিল করতে চায়, তখন তারা (সুপ্রিমকোর্ট) পারছে না। যখন পদোন্নতি দিতে চায়, তখন পারছে না। যখন ডিসিপ্লিনারি অ্যাকশন নিতে চায়, তখন পারছে না। প্রধান বিচারপতি বলছেন, দিস ইস, হোয়াট ইজ এ দ্বৈত শাসন। এক শাসন প্রধান বিচারপতির হাতে। আরেক শাসন আইন মন্ত্রণালয়ে। যাবে কোথায়? সংবিধান অনুসারে সব করে দিচ্ছি। কিন্তু বদলিও করতে পারি না, পদোন্নতিও দিতে পারি না। ডিসিপ্লিনারির অ্যাকশনও নিতে পারি না!
অধস্তন আদালতের ১৫ বিচারক নিয়ে দুদকের চিঠি নিয়ে আইনজীবী শিশির মনির বলেন, বৃহস্পতিবার একটা খবর বেরিয়েছে। অধস্তন আদালতের ১৫ জন বিচারক নিয়ে দুদক চিঠি ইস্যু করেছে। আনফরচুনেটলি এরা অনেকে ঢাকার সিএমএমএ ছিল। আপনি যদি একজন পেশকারকে জিজ্ঞাসা করেন ওমুকের নামে এটা হয়েছে, তারা বলবে, স্যার ঠিক আছে। এটা এমনে এমনে হয়নি। তাদের দিয়ে রাজা-বাদশাহর ক্ষমতা এক্সারসাইজ করা হয়েছে। তাদের কলিগরা (অন্য বিচারকরা) তাদের দ্বারা নির্যাতিত। বিকজ অদৃশ্য হাত। তাদের মাধ্যমে বাকিদের নিয়ন্ত্রণ করত। এমনকি বদলির জন্য মন্ত্রণালয়ে দরখাস্ত দিলে বলত, আগে অমুকের সঙ্গে আলাপ কর।