রাজনগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ইউকে’র দ্বি-বার্ষিক সাধারণসভা ও নির্বাচন সম্পন্ন
দৈনিক প্রেসনোট
লন্ডন অফিস: রাজনগর ওয়েলফেয়ার সোসাইটি ইউকে’র দ্বি-বার্ষিক সাধারণসভা ও নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে।
গত ৯ ফ্রেব্রুয়ারি রোববার কেমডেনের সমার্সটাউন ইউথ সেন্টারে অনুষ্ঠিত দ্বি-বার্ষিক সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল হান্নান তরফদার। সাধারণ সম্পাদক রুহুল ইসলাম দুদুর পরিচালনায় ও শাহ চেরাগ আলীর কন্ঠে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে সূচিত এ সভায় বিগত টার্মের কার্য্ক্রম এর উপর রিপোর্ট পেশ করেন সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারি । সংগঠনের কার্য্যক্রম ও একাউন্টসের বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করেন সাবেক ট্রেজারার ।
আর্তমানবতার কল্যানে কাজ করে যাওয়া এ সংগঠনটি বিগত দিনগুলোতে নানাবিধ জনকল্যাণমূলক কাজের পাশাপাশি বিলেতের স্থানীয় পর্যায়ে বিশেষ ভূমিকা রাখা মানুষদের মূল্যায়ন করে আসছে উল্লেখ করে সাবেক সভাপতি ও সেক্রেটারি এর ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে নতুন কমিটির সকলের প্রতি আহ্ববান জানান।
বিলেতে বিভিন্ন শহর থেকে আগত সংঘটনের সদস্যদের সরব উপস্থিতিতে সৌহার্দপূর্ণ এ সভায় সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন সাবেক সভাপতি আতাউর রহমান কুটি ফাউন্ডিং সভাপতি সাঈদুর রহমান রেনু, এডভাইজারী বোর্ডের প্রেসিডেন্ট এম মান্নান। বক্তারা সংগঠনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বিভিন্ন কার্যক্রমের ভূয়সী প্রসংশা করে সম্প্রতি সংগঠনের কয়েকজন সদস্য পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে স্মৃতিচারণ করেন।
পরে নতুন কমিটি গঠনের কার্যক্রম শুরু হয়। এতে নির্বাচন কমিশনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কেমডেনের মেয়র সমতা খাতুন ও বিসিএস সাবেক প্রসিডেন্ট এন এ মুনিম।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্য কেমডেনের মেয়র সমতা খাতুন বলেন, স্থানীয় কমিউনিটির বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম সহ দেশের বিভিন্ন আর্তসামাজিক কার্যকলাপে এ সংগঠনটি চমৎকার ভূমিকা রাখছে। স্থানীয়ভাবে যে কোন কার্যক্রমে আমার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বিসিএস সাবেক প্রসিডেন্ট এন এ মুনিম বলেন, বাংলাদেশ ইতিহাস ঐতিহ্যকে লালন করে আমাদের সকল সংগঠনগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। আগামী প্রজন্মকে সাথে নিয়ে এ সংগঠনকে এগিয়ে নিতে তিনি আহ্বান জানান।
‘দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনার এম এ মুনিম নবনির্বাচিত কমিটির সভাপতি হিসেবে ময়নুল ইসলাম, সেক্রেটারী আব্দুল মুকিত ফারুক ও ট্রেজারার ইকবাল হোসেন সাচ্চুর নাম ঘোষণা করেন।
সংগঠনের সকল সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে আগামী দিনগুলোতে সকলের সহযোগিতা নিয়ে সংগঠনের কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন নতুন কমিটির সভাপতি, সেক্রেটারী ও ট্রেজারার। ৫৯ সদস্য বিশিস্ট নতুন কমিটির বাকি সদস্যদের নাম আগামী ইসি মিটিংয়ে ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়।
লন্ডন বাংলা বইমেলা সমন্বয় কমিটির মেলা-পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত
দৈনিক প্রেসনোট
লন্ডন অফিস: লন্ডন বাংলা বইমেলা সমন্বয় কমিটির আয়োজনে এবং উদীচী যুক্তরাজ্যের সহযোগিতায় ১৬তম লন্ডন বাংলা বইমেলা সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর ২৬ অক্টোবর (রোববার) বিকাল ৪টায় লন্ডনে উদীচী অফিসে মেলা-পরবর্তী সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন সমন্বয় কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও উদীচী যুক্তরাজ্যের সভাপতি গোলাম মোস্তফা। শুরুতে স্বাগত বক্তব্য প্রদান ও মেলা সফলভাবে সম্পন্ন করায় সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সদস্য সচিব, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং সানরাইজ স্পেকট্রাম বাংলা রেডিও ও টিভির প্রতিষ্ঠাতা মিছবাহ জামাল।
পরে বিশিষ্ট লেখক, কবি ও সংগঠক গোলাম কবির মেলার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন এবং ভবিষ্যতে মেলা ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা আয়োজনের ক্ষেত্রে করণীয় বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা দেন। তিনি সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
মেলার আয়-ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন কোষাধ্যক্ষ মো. আরমান আলি, তাঁকে সহায়তা করেন উদীচী যুক্তরাজ্যের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমান তরফদার।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কমিটির সদস্যবৃন্দ— কুদরতে খোদা, সাম চৌধুরী, আতিয়া বেগম ঝর্ণা, রুমা জাফর, শওকাত জাহান শিবলী, হীরা কান্চন হীরক, শাহিদ আহমদ, রওশন আরা পলি, জয়িতা চৌধুরী, ড. দেবা চৌধুরী প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকল শিল্পী, কলাকুশলী ও অতিথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানানো হয় বাংলাদেশ থেকে আগত কিংবদন্তি সংগীত শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, সংগীতশিল্পী মনোয়ার হোসেন টুটুল, চন্দন দও, তন্ময়, দীপু, দীপ, পিয়াশ, ওলিভার উইকস, বেন হার্টল্যান্ড, রসালিন্ড এক্টন, কলকাতার শিল্পী মৌসুমি ভৌমিক, উপস্থাপক শম্পা রেজা, নিশাত খুশবু, এরিনা সিদ্দিকী সুপ্রভা, কিশওয়ার মুনিয়া, এবং সাউন্ড ও মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় শামসুল জাকি স্বপন ও গোলাম আকবর মুক্তাকে।
এছাড়া সমন্বয় কমিটির জয়েন্ট কনভেনার কবি মুজিবুল হক মনি, কো-অর্ডিনেটর তৌফিকুর রহমান তরফদার, ড. শামল চৌধুরী, রুপি আমিন, হীরা কান্চন হীরক, কবি ফয়েজুর রহমান ফয়েজ, সালমা বেগম, শামসুল আরেফিন, তানিয়া রহমান, খুরশিদা লিপি, মলি মল্লিকা, শাহিদ আহমদ, শ্রীপর্ণা দেব সরকার, নাজমুন্নাহার তন্নি, গোলাম হায়দার রাসেল, শর্মিষ্ঠা পণ্ডিত, মাহবুবা রুহি, মেহেদী হাসান, শিখা বোস, মাইশা, রাকিব, আতিয়া বেগম ঝর্ণা, আশরাফুন হোসেন, ফামিয়া খান, আজিজা সুমি, ফারহানা লিমন, সেলিনা চৌধুরী শেলি, পপি কর, জয়তি, এস এম আসাদুল্লাহ, মনজু আরা মনি, ফারজানা ইসলাম মাধবী, জুবের আহমেদ, কামরান, আরিনা সিদ্দিকী সুপ্রভা, জুবাইর আহমেদ, কে.পি. মোস্তফা নিরা, সালমা, কানিজ ফাতেমা কেয়া, ফুয়াদ, কুদরতে খোদা লাকিসহ সকল সদস্যদের নাম উচ্চারণ করা হয় কৃতজ্ঞতার সাথে।
শেষে ড. দেবব্রত চৌধুরী ও জয়িতা চৌধুরীর আনা কেক কেটে উপস্থিত সবাইকে মিষ্টি মুখ করিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন সদস্য সচিব মিছবাহ জামাল।
পাকিস্তান আফগানিস্তান সংঘর্ষ: ২০০ জন নিহত
দৈনিক প্রেসনোট
প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: পাকিস্তান সেনাবাহিনী আজ রোববার জানিয়েছে, রাতভর সীমান্ত সংঘর্ষে আফগানিস্তানের তালেবান ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ২০০ যোদ্ধা নিহত হয়েছে। এসময় নিজেদের ২৩ জন সৈন্য নিহত হয়েছে বলেও স্বীকার করে পাকিস্তান।
ইসলামাবাদ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, তালেবান শিবির, চেকপোস্ট এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোতে গুলিবর্ষণ এবং হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এসময় আমাদের ২৩ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন আরও ২৯ জন। অন্যদিকে, তালেবান ও তাদের সহযোগী সংগঠনের ২ শতাধিক ‘সন্ত্রাসী’কে হত্যা করা হয়েছে।
ফিলিপাইনের কাছে আসিয়ান-এর সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তর
দৈনিক প্রেসনোট
প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: মালয়েশিয়া মঙ্গলবার ফিলিপাইনের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক ব্লকের সভাপতির দায়িত্ব হস্তান্তর করেছে। ২০২৬ সালে ম্যানিলা যখন দায়িত্ব নেবে তখন দক্ষিণ চীন সাগরের আঞ্চলিক বিরোধ তাদের এজেন্ডায় প্রাধান্য পাবে। তবে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম চলতি বছরের শেষ পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সংগঠন (আসিয়ান)-এর সভাপতির পদে দায়িত্ব পালন করে যাবেন।
তিনি কুয়ালালামপুরে অনুষ্ঠিত এক শীর্ষ সম্মেলনের সমাপ্তিতে প্রতীকীভাবে ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট ফার্ডিন্যান্দ মার্কোসের হাতে দায়িত্ব তুলে দেন। এএফপি এ খবর জানায়।
আনোয়ার বলেছেন, ‘২০২৬ সালের প্রথম দিনে আসিয়ান একটি নতুন অধ্যায় শুরু করবে’।
ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া এবং ভিয়েতনামের সাথে দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরকে সংযুক্ত করে বিতর্কিত দাবিদার চারটি আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধের অবসান।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক রায়ে এই সিদ্ধান্তের কোনো আইনি ভিত্তি নেই, কিন্তু তারপরও চীনের সাথে তাদের বিরোধ তৈরি হয়েছে।
বেইজিং এবং ম্যানিলার মধ্যে উত্তেজনা বিশেষভাবে তীব্র এবং দু’দেশের মধ্যে নিয়মিত সামুদ্রিক সংঘর্ষ ঘটছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় একজন কূটনীতিক আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে এএফপি’কে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ‘যখন স্থলভাগে ঘটনাগুলো উত্তপ্ত হয়, দক্ষিণ চীন সাগর তখনই কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় এবং সেগুলো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে’।
বিরোধপূর্ণ সামুদ্রিক অঞ্চলে আচরণ নিয়ন্ত্রণের জন্য আসিয়ান এবং চীন একটি আচরণবিধি নিয়ে আলোচনা করছে, যার লক্ষ্য আগামী বছরের মধ্যে একটি চুক্তি নিশ্চিত করা।
মার্কোস কুয়ালালামপুর শীর্ষ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আমরা যদি সহযোগিতা এবং অর্থপূর্ণ সম্পৃক্ততার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই বিশেষ করে দক্ষিণ চীন সাগরে ইতিবাচক ফলাফল অর্জন করা সম্ভব।’
কিন্তু ম্যানিলা-ভিত্তিক ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডন ম্যাকলেইন গিল এএফপি’কে বলেছেন,
ফিলিপাইন সামুদ্রিক নিরাপত্তার ওপর জোর দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে চীন যে কোনো চুক্তিতে সম্মত হলে সম্ভবত দুর্বলতা থাকবে।
কূটনীতিক এবং বিশ্লেষকরা বলেছেন, ম্যানিলা আরো উত্তেজনা রোধ করতে এবং বেইজিংয়ের সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রচেষ্টা চালাবে।
সম্ভাব্য সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র আবহাওয়া, যা সামুদ্রিক নিরাপত্তার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সেইসাথে মাছ ধরার ক্ষেত্রগুলোতে প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও।
আসিয়ানের সভাপতি হিসেবে ফিলিপাইন ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে গৃহযুদ্ধে জর্জরিত মিয়ানমারে ব্লকের ভূমিকাও পালন করবে।
সোলারিস স্ট্র্যাটেজিজ সিঙ্গাপুরের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক মুস্তাফা ইজ্জুদ্দিন বলেছেন, ‘ফিলিপাইন সরকারের জন্য দক্ষিণ চীন সাগরের বিষয়টি আসিয়ানের অন্যান্য অগ্রাধিকারকে গ্রাস করতে না দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।’
২৮ ডিসেম্বর নির্বাচনের জন্য মিয়ানমার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কূটনৈতিক সূত্র এএফপি’কে জানিয়েছে, আসিয়ান এই নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে না। তবে পৃথক সদস্য রাষ্ট্রগুলো নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাতে পারে।
ম্যানিলা একটি সম্মিলিত আসিয়ান অবস্থান তৈরির কাজ করবে। যার মধ্যে অভ্যুত্থানের পর থেকে তাদের নিষিদ্ধ করা আঞ্চলিক বৈঠকে জান্তা নেতাদের আবার আমন্ত্রণ জানানো হবে কিনা তা অন্তর্ভুক্ত। এটি মিয়ানমারের জন্য একজন স্থায়ী দূত নিয়োগের আলোচনাও তত্ত্বাবধান করবে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বৈঠক
দৈনিক প্রেসনোট
প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: : ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠক শুরু হয়। দলের মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এই তথ্য জানান।
বৈঠকে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ও যুগ্ম মহাসচিব হুমায়ুন কবির, সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারপার্সনের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক বিশেষ সহযোগী উপদেষ্টা কমিটির সদস্য শামা ওবায়েদ এবং দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন।
যুক্তরাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় চালু হতে যাচ্ছে ভি-লেভেল (V-Level)
দৈনিক প্রেসনোট
জামাল আহমেদ, PGCE, QTS : যুক্তরাজ্যে শিক্ষাব্যবস্থায় এক নতুন সংযোজন হিসেবে চালু হতে যাচ্ছে ভি-লেভেল (V-Level) যোগ্যতা। এটি শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের দক্ষতা ও একাডেমিক জ্ঞানকে একত্রিত করে শিক্ষাকে আরও কার্যকর, নমনীয় ও প্রয়োগভিত্তিক করে তুলবে। লেখক জামাল আহমেদ, যিনি যুক্তরাজ্যে মাধ্যমিক ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষকতা করছেন, তাঁর অভিজ্ঞতার আলোকে এই প্রতিবেদনে ভি-লেভেল যোগ্যতার গুরুত্ব, বৈশিষ্ট্য ও সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করেছেন।
ভি-লেভেল: শিক্ষার নতুন দিগন্ত
লেখকের অভিজ্ঞতায় দেখা যায়, সঠিক দিকনির্দেশনা ও উপযুক্ত যোগ্যতা শিক্ষার্থীর জীবন পুরোপুরি বদলে দিতে পারে। অনেক শিক্ষার্থী নিজেদের ক্ষমতা সম্পর্কে অনিশ্চিত থাকে, কিন্তু বাস্তবভিত্তিক শিক্ষা তাদের আত্মবিশ্বাস জোগায়।
যখন যুক্তরাজ্যের শিক্ষা সচিব ব্রিজিট ফিলিপসন (Bridget Phillipson) নতুন ভি-লেভেল চালুর ঘোষণা দেন, তখন এটি লেখকের কাছে এক আশাব্যঞ্জক পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিভাত হয়। কারণ এই শিক্ষাপথটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যা তাত্ত্বিক জ্ঞান ও বাস্তব অভিজ্ঞতা—দুই ক্ষেত্রকেই সমানভাবে গুরুত্ব দেয়।
নতুন শিক্ষাপথ ও মূল বৈশিষ্ট্য
২০২৭ সাল থেকে যুক্তরাজ্য সরকার লেভেল–৩ পর্যায়ে ভি-লেভেল নামের এই বৃত্তিমূলক যোগ্যতা চালু করবে। এটি এ-লেভেল (A-Level) এবং টি-লেভেল (T-Level)-এর পাশাপাশি একটি স্বতন্ত্র বিকল্প হিসেবে থাকবে।
ভি-লেভেলের বিশেষত্ব:
-
এটি একাডেমিক শিক্ষা ও বাস্তব দক্ষতার মধ্যে ভারসাম্য স্থাপন করবে।
-
শিক্ষার্থীরা নিজেদের আগ্রহ অনুযায়ী শিখতে পারবে।
-
শেখা আরও নমনীয়, প্রায়োগিক এবং পেশাভিত্তিক হবে।
টি-লেভেল ও ভি-লেভেলের পার্থক্য:
যেখানে টি-লেভেল একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে গভীর জ্ঞান প্রদান করে, সেখানে ভি-লেভেল বিস্তৃত ও অভিযোজ্য শিক্ষার সুযোগ দেয়। ফলে শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা, শিক্ষানবিসতা বা পেশাগত জীবনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারবে।
ভি-লেভেলের বাস্তব উদাহরণসমূহ
-
রন্ধনশিল্পে আগ্রহী শিক্ষার্থী: রান্নার দক্ষতা ও ব্যবসায়িক শিক্ষা একত্রে শিখে ক্যাফে বা ক্যাটারিং ব্যবসা শুরু করতে পারে।
-
প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী: ডিজিটাল মিডিয়া ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা শেখার মাধ্যমে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করবে।
-
স্বাস্থ্য ও সমাজসেবায় আগ্রহী শিক্ষার্থী: বাস্তব কাজের অভিজ্ঞতা ও তাত্ত্বিক জ্ঞান মিলিয়ে হাসপাতাল, কেয়ার হোম বা সমাজসেবায় কাজের যোগ্যতা অর্জন করবে।
শিক্ষাগত বিশ্লেষণ
লেখক বহু বছর ধরে স্বাস্থ্য, ব্যবসা, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য নিরাপত্তা ও আতিথেয়তা বিষয়ে শিক্ষাদান করেছেন। তাঁর অভিজ্ঞতায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি আগ্রহী হয় তখনই, যখন শেখা বাস্তব জীবনের সাথে সংযুক্ত থাকে।
ভি-লেভেল শিক্ষার্থীদের জন্য যে সুযোগ সৃষ্টি করে তা হলো—
-
শিক্ষায় স্বচ্ছতা ও নমনীয়তা,
-
কর্মসংস্থানযোগ্যতা বৃদ্ধি,
-
এবং উন্নতির বাস্তব সুযোগ।
এটি বিশেষভাবে সহায়ক হবে তাদের জন্য, যারা একাডেমিকভাবে নয় বরং হাতে-কলমে শেখায় বেশি দক্ষ। ভি-লেভেলে এমন ফাউন্ডেশন যোগ্যতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের GCSE গ্রেড ৪ অর্জনের পথে সহায়তা করবে।
সহযোগিতা ও কার্যকারিতা
ভি-লেভেলের সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে বিদ্যালয়, কলেজ ও নিয়োগকর্তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার উপর। যখন শিক্ষক, প্রশিক্ষক ও শিল্পখাত একত্রে কাজ করবে, তখন শিক্ষা শুধুমাত্র জ্ঞানার্জনের মাধ্যম না থেকে জীবনের প্রস্তুতি হয়ে উঠবে। শিক্ষার্থীরা বুঝতে পারবে—তাদের শেখা অর্থবহ এবং তাদের ভবিষ্যতের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত।
ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি
ভি-লেভেল শিক্ষার্থীদের এমন দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস প্রদান করবে, যা দিয়ে তারা শুধু পেশাগত চাহিদা মেটাবে না, বরং নিজের ভবিষ্যতও গঠন করবে।
উদাহরণস্বরূপ, একজন ডিজিটাল মিডিয়া শিক্ষার্থী সফটওয়্যার শেখার পাশাপাশি বাস্তব ক্লায়েন্ট প্রজেক্টে কাজ করবে, পেশাদার পোর্টফোলিও তৈরি করবে এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করবে ফ্রিল্যান্স কাজ, নিজস্ব ব্যবসা বা পেশাগত পদে স্থায়িত্ব আনতে।
লেখকের মতে, যখন একজন শিক্ষার্থী নিজের পথ খুঁজে পায় এবং আত্মবিশ্বাস অর্জন করে, তখন তার মধ্যে যে পরিবর্তন আসে তা সত্যিই অনন্য—এটি একজন শিক্ষকের জীবনের সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক মুহূর্ত।
জামাল আহমেদ বিশ্বাস করেন, ভি-লেভেল কেবল একটি নতুন যোগ্যতা নয়, বরং একটি দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন—যা তরুণদের দক্ষ, আত্মবিশ্বাসী ও অনুপ্রাণিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলবে। এর মাধ্যমে তারা কেবল নিজেদের জীবনে নয়, সমাজেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবে।
লিখেছেন: জামাল আহমেদ, PGCE, QTS
শিক্ষক, যুক্তরাজ্য

