ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বাড়ি ভাঙ্গার প্রতিবাদে লন্ডনে বিক্ষোভ


লন্ডন অফিস: বাঙালির স্বাধীকার থেকে স্বাধীনতা, সকল সংগ্রামের সূতিকাগার, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তি ও রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিবিজড়িত ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বর বাড়ি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ বৃহস্প্রতিবার লন্ডন সময় দুপুর ২ঘটিকায় 28 QUEENS GATE LONDON SW7 5JA বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ করেছে শত শত প্রবাসী বাঙালি। আওয়ামীলীগ ছাড়াও ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্থ থেকে দলমত নির্বিশেষে প্রবাসীরা অংশ নিয়ে এর প্রতিবাদ জানায়।
প্রতিবাদ সমাবেশে অংশ গ্রহনকারীরা বলেন ৫ফেব্রুয়ারী রাতে ঢাকাসহ দেশ জুড়ে একযোগে আওয়ামীলীগ সংশ্লিষ্টদের স্থাপনায় যত হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে তা ছিল জঙ্গিগোষ্টী এবং স্বাধীনতা বিরোধীদের সুপরিকল্পিত একটি পরিকল্পনা। এর পেছনে মূল কারিগর হিসেবে কাজ করেছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আব্দুলল্লাহ, সারজিস আলম এবং উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও ড. ইউনুসের প্রেস সচিব শফিকুল আলম, বিদেশ থেকে এদের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ রেখেছে পিনাকী ভট্র, ইলিয়াস, হোসেন, কনক সরোয়ার, সাইফুর সাগর সহ কয়েকজন । যারা বিদেশে বসে পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এর পেছনে ড. ইউনুসের সরকারের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। প্রশাসন বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ বাঁধা দেয়নি। পুলিশি এবং আর্মি দূর থেকে নীরবে দাড়িয়ে দেখেছে জঙ্গিদের উল্লাস।
হামলা কারীরা যখন ভবন গুড়িয়ে দিচ্ছিল তখন দেখাগেছে হামলাকারীদের কয়েকজন ওই ভবনে জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর পতাকা টানিয়েছে। দেশব্যাপী ভবন ভাংচোর করতে ব্যবহার করা হয় সরকারী এস্কেভেটর। এতে বিষয়টি পরিস্কার অন্তবর্তি কালীর সরকারের পৃষ্টপোষকতায় হামলাকারীরা দেশব্যাপী তান্ডব চালাচ্ছে। বিষয়টি আরো পরিস্কার পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই-এর মদদে স্বাধীনতা বিরোধীরা ১৯৭১ এর প্রতিশোধ নিচ্ছে।
বিক্ষোভ কারীরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন- এই সরকার বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিনত করার লক্ষ্যে কাজ করছে। ৫ আগষ্ট ২০২৪ এর পর থেকে দেশব্যাপী মবজাষ্ট্রিজ, একের পর এক মানবাধিকার লংঘনের ঘটনা এবং দেশব্যাপী জঙ্গিদের উত্থান এরই ইঙ্গিত বহন করে। সমাবেশকারীরা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন সমূহ এবং বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন আপনারা বাংলাদেশের ১৮কোটি মানুষকে জঙ্গিবাদের হাত থেকে রক্ষা করুন। বাংলাদেশের মানুষ যুগ যুগ ধরে সাম্প্রদায়িক সম্পৃতির মাঝে বসবাস করে আসছে। এখানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ সম্পৃতির মাথে বসবাস করে অভ্যস্থ। বাংলাদেশে জঙ্গি উত্থান নাঠেকাতে পারলে এর পরিনতি ভোগ করতে হবে- ভারত সহ দক্ষিন এশিযার দেশগুলোকে।
সমাবেশ থেকে রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্নস্থানে গতকালের হামলার একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরা হয়।
রাজধানী ঢাকা
১. ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের বাড়িতে হামলা, অগ্নিসংযোগ, বুলডোজারে মাধ্যমে ধ্বংস করা। ২. ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পর ধানমন্ডি ৫/এ–তে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে আগুন। ৩. আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ভবনে আগুন দিয়েছে জঙ্গিরা। ৪. ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ভেতরে সেনাবাহিনী উপস্থিত হলে হামলাকারীরার ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে দেখা যায়, এসময় সেনাবাহিনী নীরব দর্শকের ভুমিকা পালন করে।
ঢাকার বাইরে
১. রাজশাহীর পুঠিয়ায় যুব মহিলা লীগ নেত্রীর আওয়ামী লীগের প্রচারপত্র বিলির জেরে তার স্বামীকে মারধর করে পুলিশে সোপর্দের পর বাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। ২. সিলেটে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙচুর হওয়া ম্যুরালটি এবার বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী হামলাকারীরা। ৩. কুষ্টিয়ায় বুলডোজার দিয়ে ভাঙা হয়েছে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া–৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়ি। ৪. চট্টগ্রামে চমেক ও নগরের জামাল খান এলাকায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর। ৫. রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। ৬. ময়মনসিংহ নগরের সার্কিট হাউস মাঠসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর শুরু করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা–কর্মীরা। ৭. খুলনায় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে শেখ হাসিনার চাচাত ভাই সাবেক এমপি শেখ হেলালের বাড়ি। ৮. ভোলায় আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদের বাসভবনে ভাঙচুর ও আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়। ৯. যশোর শহরের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আবক্ষ মূর্তি ও ম্যুরাল ভাঙচুর। ১০. সাতক্ষীরা শহরের খুলনা মোড়ে শহীদ আসিফ চত্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষুব্ধ হামলাকারীরা। ১১. বরিশাল নগরীতে আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বাসভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ১২. পিরোজপুরে জেলা আওয়ামী লীগের দুই নেতার বাড়িতে আগুন।
১৩. চুয়াডাঙ্গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল এবং জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেছে হামলাকারীরা। ১৪. কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। ১৫. সুনামগঞ্জ পৌর শহরে দুটি প্রতিষ্ঠানের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের দুটি ম্যুরাল ভাঙচুর করেছেন হেফজতে ইসলামের অনুসারীরা। ১৬. পঞ্চগড় জেলা পরিষদ চত্বরের শেখ মুজিবুর রহমানের ভাঙা ম্যুরাল ভাঙচুর। ১৭. বরিশালে আমির হোসেন আমুর বাড়ি ভাঙা হলো বুলডোজার দিয়ে। ১৮. কুমিল্লায় সাবেক সংসদ সদস্য আ.ক. ম .বাহাউদ্দীন বাহারের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে
১. রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল নিয়ে কয়েকটি আবাসিক হলের নামফলক ভেঙে নতুন নামকরণ করেন হামলাকারী বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থীরা। ২. জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ম্যুরাল ভেঙেছে হামলাকারীরা। ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল পাড়ায় অবস্থিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল’ থেকে শেখ মুজিবের নাম মুছে ফেলা হয়েছে। ৪. সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বুলডোজার দিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫. সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক ভবন সংলগ্ন শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভাঙচুর। ৬. পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পাবিপ্রবি) ছাত্রদের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল এবং ছাত্রীদের শেখ হাসিনা হলের নামফলক ভেঙে দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা ৭. খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ মুজিবের ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে হামলাকারীরা।
গেল বছরের ৫ আগষ্ট আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লাইভে বক্তব্য দেওয়ার ঘোষণা নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশকে ‘ফ্যাসিবাদের তীর্থভূমি’ মুক্ত করার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক সাবেক ছাত্র শিবির নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ। এর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এসব হামলা, ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনার খবর আসতে শুরু করে। আজও দেশব্যাপী এই তান্ডব চলছে।
তাৎক্ষনিক এই বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ সাজিদুর রহমান, ফারুক, সিলেট সিটি মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, আব্দুল আহাদ চৌধুরী, হরমুজ আলী, নইম উদ্নি রিয়াজ, সৈয়দ ছুরুক আলী, আব্দুল হান্নান, হাজী জিল্লুল হক, মারুফ চৌধুরী, শাহ শামীম আহমদ, মেগের নিগার চৌধুরী, মোবারক আলী, আ.স. ম মিসবাহ, আলতাফুর রহমান মোজাহিদ, ফখরুল ইসলাম মধূ, আনজুমান আরা আঞ্জু, জামাল আহমদ খান, ফয়েজ খান তৌহিদ, মাসুক ইবনে আনিস, নাজমা বেগম, তামিম আহমদ, খালেদ আহমদ শাহীন প্রমুখ।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।
পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা: জিম্মি ১৮২, নিহত ২০ সেনা


প্রেসনোট আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান অঞ্চলে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। সেখানে সামরিক কর্মকর্তাসহ ১৮২ জনকে জিম্মি করেছে দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলুচিস্তানের বোলান এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় গোলাগুলিতে ২০ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএলএ। তবে পাকিস্তানি কতৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিকত করেনি। অন্যদিকে, গোষ্ঠিটি হুমকি দিয়ে বলেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বা পুলিশ যদি জিম্মিদের বাঁচাতে কোনো ধরনের অভিযান চালায় তাহলে সকল জিম্মিকে হত্যা করা হবে। খবর রয়টার্সের।
দেশটির রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলেছেন, জাফর এক্সপ্রেস নামের ওই ট্রেনে ৪০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশওয়ারের উদ্দেশে যাওয়ার সময় সেটি হামলা চালিয়েছেন সশস্ত্র বন্দুকধারীরা।
হামলাকারীরা নারী, শিশু, প্রবীন ও বেলুচিস্তানের নাগরিকদের নিরাপদে ছেড়ে দিয়ে বাকী ১৮২ জনকে জিম্মি করেছে। তাদের উদ্ধারের কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হলে ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। সাংবাদিকদের ইমেইল এবং টেলিগ্রামে এক পোস্ট করে এ তথ্য জানিয়েছে বিএলএ।
পাকিস্তানের পুলিশ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছে, হামলায় ট্রেনের চালকসহ তিনজন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে তারা। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নওয়াজ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিরীহ যাত্রীদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
ঢাকায় ফেরার নির্দেশ অগ্রাহ্য করে কানাডায় গেছেন রাষ্ট্রদূত হারুন রশিদ


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ইতোমধ্যে মন্ত্রণালয় তার এবং তার পরিবারের পাসপোর্টসমূহ বাতিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
আজ শুক্রবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘মরক্কোতে বাংলাদেশের সদ্য বিদায়ী রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ হারুন আল রশিদকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত ১১ ডিসেম্বর দেশে প্রত্যাবর্তন ও অনতিবিলম্বে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের জন্য আদেশ দেওয়া হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তিনি তার পদে বহাল থেকে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দায়িত্ব ত্যাগ করেন। বাংলাদেশে ফিরে আসার পরিবর্তে, তিনি বিভিন্ন অজুহাতে তার যাত্রা বিলম্বিত করেন। মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমোদন ছাড়াই তিনি মরক্কোর রাবাত থেকে কানাডার অটোয়ায় চলে গেছেন বলে জানা গেছে। গত ৬ মার্চ তার অটোয়া থেকে ঢাকায় ফিরে আসার কথা থাকলেও তিনি ফেরত আসেননি।’
আজ তার ফেসবুক প্রোফাইলে তিনি ‘বাংলাদেশের জন্য এবং আমার নিজের জন্য একটি আবেদন বিষয় : ইউনূসের অধীনে বাংলাদেশের অরাজকতার অবতরণ – বিশ্বের নীরবতা বেদনাদায়ক’ শীর্ষক একটি লেখা পোস্ট করেছেন যেখানে তিনি পূর্ববর্তী নিপীড়ক ফ্যাসিবাদী সরকারের গুণকীর্তনের পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গত ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশে পরিস্থিতি ক্রমশ নৈরাজ্যের দিকে ধাবিত হচ্ছে বলে চিত্রায়িত করার অপচেষ্টা করেছেন। তার পোস্টে হারুন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসসহ অন্তর্বর্তী সরকার কর্তৃক গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাসহ বাংলাদেশের সামগ্রিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টা করেছেন।’
প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বর্তমান বাংলাদেশে বিরাজমান পরিস্থিতি এবং বাস্তবতাকে সম্পূর্ণরূপে বিকৃত উপস্থাপন করে ফেসবুকে এ ধরনের লেখা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, এ ধরনের লেখার বিষয়বস্তু গভীরভাবে উদ্বেগজনক। এ ধরনের রচনা লেখকের গোপন উদ্দেশ্য বা অসৎ অভিসন্ধির ইঙ্গিত দেয়।
বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করে মন্ত্রণালয়ে যোগদানের পরিবর্তে তিনি কানাডায় চলে যান এবং সেখান থেকে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু করেন। তিনি তার ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ‘নির্যাতিত কূটনীতিক’, ‘নির্বাসিত ঔপন্যাসিক’ ও ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন, যা মূলত বিদেশে সহানুভূতি অর্জনের অভিপ্রায়ে করা হয়েছে বলে মন্ত্রণালয় উল্লেখ করে।
সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি: জাতিসংঘ মহাসচিব


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। যেকোনো সহযোগিতা লাগলে আমাদের জানান।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আজ শুক্রবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে এক বৈঠকে সংস্কার এজেন্ডার প্রতি জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বিশ্বব্যাপী ‘সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী’ রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি চার দিনের সফরে গতকাল ঢাকায় আসেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে সংস্কার প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে’।
গুতেরেস বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে তিনি রমজান মাসে বাংলাদেশে এসেছেন।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি’। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলতে বসেছে’।
‘মানবিক সহায়তা হ্রাস করা একটি অপরাধ’ উল্লেখ করে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করছে, কিন্তু তখন আবার বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা সংকুচিত হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ‘অপরিসীম কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত উদারতা দেখিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি আমার জন্য একটি বিশেষ বিষয়’।
তিনি বলেন, ‘আপনার আসার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারত না। আপনার সফর কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী’।
প্রধান উপদেষ্টা গুতেরেসকে সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দলগুলো ছয়টি কমিশনের সুপারিশসমূহের সাথে একবার একমত হলে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচন সংক্রান্ত, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন এবং পুলিশ সংস্কারের একটি রূপরেখা হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে, তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চান, যাতে রোহিঙ্গারা সম্মানের সাথে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। তিনি বলেন, যতদিন তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে ততদিন পর্যন্ত তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা যেন নিশ্চিত করা যায়।
তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা হতাশার অনুভূতি রয়েছে’।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন।
গুতেরেস বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম ‘অসাধারণ’ এবং বাংলাদেশ ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার অগ্রভাগে রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন,‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’।
অধ্যাপক ইউনূসও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদ্যেদের প্রশংসা করে বলেন, এই মিশনে কাজ করার ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন,‘শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ’।
বৈঠকে ভূ-রাজনীতি, সার্কের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী দেশেগুলোর সম্পর্কের বিষয় নিয়েও আলোচনায় হয়। অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ফোরামকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হতে চায়।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে একাধিক বন্দর নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কেও কথা বলেন, যা নেপাল ও ভুটানসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশকে ‘একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও জাপানসহ প্রায় প্রতিটি দেশের সমর্থন পেয়েছে।অর্থনীতি প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ভঙ্গুর ব্যাংকিং খাত, সংকোচিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙ্গে পড়া অবস্থায় পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি এখন সুসংহত হয়েছে। রপ্তানি কয়েক মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে’।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অর্থনীতি এমনভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ।তিনি বলেন,‘আমরা এলডিসি উত্তরণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছি’। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের শাসনামলে লুটপাট হওয়া কয়েকশো বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আগের সরকারের রেখে যাওয়া অর্থনীতির ভঙ্গুর পরিস্থিতি তাকে ১৯৭৪ সালের পর্তুগালের বিপ্লবী দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইসও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
চোখের পাতা নড়েছে মাগুরার সেই শিশুটির: উপ-প্রেসসচিব


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থান সামান্য উন্নতি হয়েছে; পাঁচদিনের মাথায় তার চোখের পাতায় নড়াচড়াও দেখা গেছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে।
“তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিকে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুই-এক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ নিয়মিত শিশুটির খোঁজখবর রাখছেন জানিয়ে আজাদ মজুমদার আরও বলেন, “আজও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।”
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসা চলছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) প্যাডিয়াট্রিক আইসিইউতে।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
গত শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।
রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
ভারতে স্টারলিংক আনবে এয়ারটেল, স্পেসএক্সের সঙ্গে চুক্তি


প্রেসনোট আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এয়ারটেল ভারতের গ্রাহকদের কাছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারলিংকের উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দিতে একটি চুক্তি ঘোষণা করেছে। দুই কম্পানির বরাত দিয়ে এনডিটিভি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এয়ারটেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি ভারতে স্বাক্ষরিত প্রথম চুক্তি। তবে স্পেসএক্সকে ভারতে স্টারলিংক পরিষেবা বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে হবে।
এয়ারটেল ও স্পেসএক্স একসঙ্গে কাজ করে এয়ারটেলের খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রে স্টারলিংকের সরঞ্জাম সরবরাহ, এয়ারটেলের মাধ্যমে ব্যাবসায়িক গ্রাহকদের স্টারলিংক পরিষেবা দেওয়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সম্প্রদায়, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুযোগ অন্বেষণ করবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি বিবৃতিতে আরো বলেছে, ‘স্পেসএক্সের সঙ্গে অংশীদারে স্টারলিংক পরিষেবা আনার এই পদক্ষেপ এয়ারটেলের গ্রাহকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি পরবর্তী প্রজন্মের স্যাটেলাইট সংযোগের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির আরেকটি প্রমাণ।’
স্পেসএক্সের মালিকানাধীন স্টারলিংক একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক, যা বিশ্বব্যাপী মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ইন্টারনেটব্যবস্থা ব্যবহার করে প্রত্যন্ত স্থানেও স্ট্রিমিং, ভিডিও কল, অনলাইন গেমিং, রিমোট ওয়ার্কসহ বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করে।
এয়ারটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল ভিত্তল বলেছেন, ‘এই অংশীদারি আমাদের ভারতের সর্বদূরবর্তী এলাকাতেও বিশ্বমানের উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা বাড়াবে, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি, ব্যবসা ও সম্প্রদায় নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সুবিধা পায়। স্টারলিংক এয়ারটেলের পণ্যসম্ভারকে আরো শক্তিশালী করবে, যাতে ভারতের গ্রাহকরা যেখানেই বসবাস বা কাজ করুক না কেন, তারা যেন নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী ব্রডব্যান্ড সুবিধা পেতে পারে।’
অন্যদিকে স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট ও চিফ অপারেটিং অফিসার গুইন শটওয়েল বলেছেন, ভারতের টেলিকম শিল্পে এয়ারটেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তাই স্পেসএক্সের সরাসরি পরিষেবার পরিপূরক হিসেবে তাদের সঙ্গে কাজ করাটা ব্যাবসায়িকভাবে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এয়ারটেলের সঙ্গে কাজ করতে ও স্টারলিংকের রূপান্তরকারী প্রভাব ভারতের জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে উদগ্রীব। আমরা প্রতিনিয়ত বিস্মিত হই যখন দেখি, মানুষ, ব্যবসা ও সংস্থাগুলো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে কী কী অসাধারণ ও অনুপ্রেরণামূলক কাজ করছে।’
প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিও ভারতের ব্রডব্যান্ড বাজারে শীর্ষে রয়েছে, যার এক কোটি ৪০ লাখের বেশি ওয়্যার্ড ব্রডব্যান্ড গ্রাহক রয়েছে। একই সঙ্গে জিওর প্রায় ৫০ কোটি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে।
এয়ারটেলেরও প্রায় ৩০ কোটি ব্রডব্যান্ড গ্রাহক রয়েছে।
তবে টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বেগ রয়েছে, দুই হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয়ে স্পেকট্রাম কিনেও তারা এখন ইলন মাস্কের স্টারলিংকের কারণে গ্রাহক হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ স্যাটেলাইট প্রযুক্তি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।