ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীরা লন্ডনে মিছিল করেছে


লন্ডন অফিস: গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের অবসানের আহ্বান জানিয়ে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভকারীরা লন্ডনে মিছিল করেছে।
শনিবার, ৫ অক্টোবর, হাজার হাজার মানুষ রাসেল স্কোয়ার থেকে হোয়াইটহল পর্যন্ত হেঁটে ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে সমাবেশ গিয়ে যোগদান করে। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের গণহত্যার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইনসহ বিভিন্ন গ্রুপের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়, যাতে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে অনেকেই আসেন ।
“এখনই যুদ্ধবিরতি” এবং “এখন বোমাবর্ষণ বন্ধ করুন” এর মতো বার্তা সম্বলিত ফিলিস্তিনি পতাকা এবং প্ল্যাকার্ড বহন করতে লোকজনকে দেখা যায়।
মিছিলকারীদের মধ্যে ‘বেঙ্গলিজ ফর প্যালেস্টাইন’ ব্যানারে পূর্ব লন্ডনের বাঙালিদের একটি দল ছিল। দলের সভাপতি নুরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘গত ১২ মাস ধরে, ফিলিস্তিনিরা তাদের স্বাধীনতার সংগ্রামে সবচেয়ে অন্ধকার মুহূর্তের মুখোমুখি হয়েছে, কারণ ইসরায়েল তাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন নৃশংসতা চালিয়েছে, গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যামূলক হামলা চালিয়েছে।‘
বাঙালির মিছিলে ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটস্ প্রাক্তন কাউন্সিলর শহীদ আলী, বর্ণবাদ বিরোধী এক্টিভিস্ট রফিক উল্লাহ, টাওয়ার হ্যামলেটস্ প্রাক্তন কাউন্সিলর জয়নাল উদ্দিন, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিস্ট তৈমুস আলী, লুকমান উদ্দিন, আলা মিয়া আজাদ, জামাল আহমেদ খান, আনসার আহমেদ উল্লাহ, মোহাম্মদ সিদ্দিক, শফিক আহমেদ, মজিবুল হক মনি, সৈয়দ গুলাব আলী প্রমুখরা বলেন, যে ব্রিটিশ সরকার ইসরায়েলের সাথে সমস্ত অস্ত্র ব্যবসা বন্ধ করার দাবিতে আমরা মিছিল করছি। ফিলিস্তিনি জনগণের স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের দাবিতে আমরা মিছিল করছি।
প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইনের বেন জামাল বলেছেন, ‘শনিবার হাজার হাজার ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ইসরায়েলের গণহত্যার এক বছর উপলক্ষে মিছিল করেছে, এমন একটি গণহত্যা যা কমপক্ষে ৪১,০০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে, গাজার সামাজিক অবকাঠামো ধ্বংস করেছে এবং ২ মিলিয়নেরও বেশি মানুষকে বাস্তুচ্যুত করেছে। কয়েক মাস ধরে, আমরা সতর্ক করে আসছি যে ইসরায়েলকে তার অপরাধের জন্য দায়মুক্তি প্রদান করলে তা হাজার হাজার ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিককে হত্যার ঝুঁকির মধ্যেই রাখবে না বরং একটি বিস্তৃত অগ্নিসংযোগের ঝুঁকি তৈরি করবে।
তিনি আরও বলেন যে গত সপ্তাহে, আমরা এই বাস্তবতাকে উন্মোচিত হতে দেখেছি, ইসরায়েল লেবানন এবং অন্যান্য প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে হামলা চালিয়েছে যা শত শত বেসামরিক নাগরিক সহ ১,০০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে অনেক শিশু ছিল। এখন, আমরা একটি বড় যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি।
চোখের পাতা নড়েছে মাগুরার সেই শিশুটির: উপ-প্রেসসচিব


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থান সামান্য উন্নতি হয়েছে; পাঁচদিনের মাথায় তার চোখের পাতায় নড়াচড়াও দেখা গেছে।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এ তথ্য জানিয়েছেন চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে।
তিনি বলেন, “চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিশুটির শারীরিক অবস্থার খুব সামান্য উন্নতি হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর প্রথমবারের মতো শিশুটি চোখের পাতা নেড়েছে।
“তবে শ্বাসরোধের কারণে তার মস্তিকে অক্সিজেন সরবরাহ বিঘ্নিত হয়েছিল। মস্তিষ্কে পানি জমে গিয়েছিল, যেটা অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। তার বুকের মধ্যে যে বাতাস জমে ছিল সেটা দূর করা গেছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী দুই-এক দিনের মধ্যে শিশুটির অবস্থার আরও উন্নতি হবে।”
প্রধান উপদেষ্টার প্রতিরক্ষা বিষয়ক বিশেষ সহকারী লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজ নিয়মিত শিশুটির খোঁজখবর রাখছেন জানিয়ে আজাদ মজুমদার আরও বলেন, “আজও তিনি চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন।”
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসা চলছে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) প্যাডিয়াট্রিক আইসিইউতে।
মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
নির্যাতনের শিকার শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে নেওয়া হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (পিআইসিইউ) এনে ভর্তি করা হয় এবং পরে শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
গত শনিবার ঢাকা মেডিকেলে শিশুটির অবস্থা ‘সঙ্কটাপন্ন’ জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। এরপর তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হলেও সন্ধ্যায় তাকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল-সিএমএইচে আনা হয়।
রোববার সকালে শিশুটির চিকিৎসার খোঁজখবর নিতে সিএমএইচে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। সেখানে তিনি শিশুটির সর্বোচ্চ চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন।
ধর্ষণের ওই ঘটনায় শিশুটির বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি, দুলাভাই ও দেবরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পরে চার আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা: জিম্মি ১৮২, নিহত ২০ সেনা


প্রেসনোট আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান অঞ্চলে যাত্রীবাহী একটি ট্রেনে হামলা চালিয়ে সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন সশস্ত্র গোষ্ঠীর সদস্যরা। সেখানে সামরিক কর্মকর্তাসহ ১৮২ জনকে জিম্মি করেছে দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলুচিস্তানের বোলান এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।
এ সময় গোলাগুলিতে ২০ পাকিস্তানি সৈন্য নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএলএ। তবে পাকিস্তানি কতৃপক্ষ এ তথ্য নিশ্চিকত করেনি। অন্যদিকে, গোষ্ঠিটি হুমকি দিয়ে বলেছে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী বা পুলিশ যদি জিম্মিদের বাঁচাতে কোনো ধরনের অভিযান চালায় তাহলে সকল জিম্মিকে হত্যা করা হবে। খবর রয়টার্সের।
দেশটির রেলওয়ে কর্মকর্তারা বলেছেন, জাফর এক্সপ্রেস নামের ওই ট্রেনে ৪০০ জনের বেশি যাত্রী ছিলেন। দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখাওয়ার পেশওয়ারের উদ্দেশে যাওয়ার সময় সেটি হামলা চালিয়েছেন সশস্ত্র বন্দুকধারীরা।
হামলাকারীরা নারী, শিশু, প্রবীন ও বেলুচিস্তানের নাগরিকদের নিরাপদে ছেড়ে দিয়ে বাকী ১৮২ জনকে জিম্মি করেছে। তাদের উদ্ধারের কোনো প্রচেষ্টা নেওয়া হলে ‘ভয়াবহ পরিণতি’ হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা। সাংবাদিকদের ইমেইল এবং টেলিগ্রামে এক পোস্ট করে এ তথ্য জানিয়েছে বিএলএ।
পাকিস্তানের পুলিশ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানিয়েছে, হামলায় ট্রেনের চালকসহ তিনজন আহত হওয়ার তথ্য পেয়েছে তারা। ঘটনাস্থলে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঠানো হয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নওয়াজ এই হামলার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, নিরীহ যাত্রীদের উপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের ছাড় দেওয়া হবে না।
সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি: জাতিসংঘ মহাসচিব


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক: সফররত জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে নেওয়া সংস্কার কর্মসূচির প্রতি পূর্ণ সমর্থন ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি সংস্কার কর্মসূচির প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতি প্রকাশ করতে চাই। আমরা আপনাদের সংস্কার প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে এখানে এসেছি। আমরা আপনাদের সর্বোত্তম সফলতা কামনা করি। যেকোনো সহযোগিতা লাগলে আমাদের জানান।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আজ শুক্রবার ঢাকার তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে এক বৈঠকে সংস্কার এজেন্ডার প্রতি জাতিসংঘের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বিশ্বব্যাপী ‘সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার জনগোষ্ঠী’ রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি চার দিনের সফরে গতকাল ঢাকায় আসেন।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে এই সংস্কার প্রক্রিয়া একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং দেশের একটি ‘বাস্তব রূপান্তর’ নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, ‘আমি জানি যে সংস্কার প্রক্রিয়াটি জটিল হতে পারে’।
গুতেরেস বলেন, জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে তিনি রমজান মাসে বাংলাদেশে এসেছেন।
কক্সবাজারের শরণার্থী শিবিরে বসবাসরত ১২ লাখ রোহিঙ্গার জন্য মানবিক সহায়তা হ্রাস নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘পৃথিবীতে এতটা বৈষম্যের শিকার অন্য কোনো জনগোষ্ঠী আমি দেখিনি’। তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ভুলতে বসেছে’।
‘মানবিক সহায়তা হ্রাস করা একটি অপরাধ’ উল্লেখ করে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, পশ্চিমা দেশগুলো এখন প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় দ্বিগুণ করছে, কিন্তু তখন আবার বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তা সংকুচিত হচ্ছে।
রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের ‘অপরিসীম কৃতজ্ঞতা’ প্রকাশ করেন গুতেরেস। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি অত্যন্ত উদারতা দেখিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠি আমার জন্য একটি বিশেষ বিষয়’।
তিনি বলেন, ‘আপনার আসার জন্য এর চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারত না। আপনার সফর কেবল রোহিঙ্গাদের জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের জন্যও সময়োপযোগী’।
প্রধান উপদেষ্টা গুতেরেসকে সংস্কার প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবহিত করে বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের বিষয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ১০টি রাজনৈতিক দল তাদের মতামত জমা দিয়েছে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, দলগুলো ছয়টি কমিশনের সুপারিশসমূহের সাথে একবার একমত হলে, তারা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে, যা দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের পাশাপাশি রাজনৈতিক, বিচারিক, নির্বাচন সংক্রান্ত, প্রশাসনিক, দুর্নীতি দমন এবং পুলিশ সংস্কারের একটি রূপরেখা হবে।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি ‘সংক্ষিপ্ত সংস্কার প্যাকেজ’ নিয়ে একমত হয়, তবে নির্বাচন ডিসেম্বরেই হতে পারে। তবে, তারা যদি ‘বৃহৎ সংস্কার প্যাকেজ’ গ্রহণ করে, তাহলে নির্বাচন আগামী বছরের জুনে অনুষ্ঠিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা ‘সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন’ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘ মহাসচিবের সহযোগিতা চান, যাতে রোহিঙ্গারা সম্মানের সাথে তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারের পশ্চিম রাখাইন রাজ্যে ফিরে যেতে পারে। তিনি বলেন, যতদিন তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছে ততদিন পর্যন্ত তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য ও মানবিক সহায়তা যেন নিশ্চিত করা যায়।
তিনি বলেন, আমরা রোহিঙ্গাদের দুর্দশার প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছি। বিশ্বকে জানতে হবে তারা কতটা কষ্ট পাচ্ছে। তাদের মধ্যে একটা হতাশার অনুভূতি রয়েছে’।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য সহায়তা সংগ্রহকে অগ্রাধিকার দেবেন।
গুতেরেস বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রম ‘অসাধারণ’ এবং বাংলাদেশ ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব প্রতিষ্ঠার অগ্রভাগে রয়েছে উল্লেখ করে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন,‘বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনী আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’।
অধ্যাপক ইউনূসও বাংলাদেশের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদ্যেদের প্রশংসা করে বলেন, এই মিশনে কাজ করার ফলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এক অনন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। তিনি বলেন,‘শান্তিরক্ষী বাহিনীতে কাজ করা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ’।
বৈঠকে ভূ-রাজনীতি, সার্কের বর্তমান অবস্থা এবং বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী দেশেগুলোর সম্পর্কের বিষয় নিয়েও আলোচনায় হয়। অধ্যাপক ইউনূস দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক ফোরামকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য তার প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর সাথে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ আসিয়ানের সদস্য হতে চায়।
প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে একাধিক বন্দর নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কেও কথা বলেন, যা নেপাল ও ভুটানসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাথে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে দেশকে ‘একটি অর্থনৈতিক কেন্দ্র’ হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও জাপানসহ প্রায় প্রতিটি দেশের সমর্থন পেয়েছে।অর্থনীতি প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে ধ্বংসপ্রাপ্ত ও ভঙ্গুর ব্যাংকিং খাত, সংকোচিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙ্গে পড়া অবস্থায় পেয়েছে। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি এখন সুসংহত হয়েছে। রপ্তানি কয়েক মাস ধরে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো অবস্থানে রয়েছে’।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, অর্থনীতি এমনভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আগামী বছর স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বাংলাদেশ।তিনি বলেন,‘আমরা এলডিসি উত্তরণের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিচ্ছি’। তিনি বলেন, পূর্ববর্তী সরকারের শাসনামলে লুটপাট হওয়া কয়েকশো বিলিয়ন মার্কিন ডলার ফেরত আনার জন্য সরকার চেষ্টা করছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, আগের সরকারের রেখে যাওয়া অর্থনীতির ভঙ্গুর পরিস্থিতি তাকে ১৯৭৪ সালের পর্তুগালের বিপ্লবী দিনগুলোর কথা মনে করিয়ে দেয়।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন, প্রধান উপদেষ্টার রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলী সংক্রান্ত হাই রিপ্রেজেনটেটিভ ড. খলিলুর রহমান এবং এসডিজি বিষয়ক সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল রাবাব ফাতিমা ও বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গুইন লুইসও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ভারতে স্টারলিংক আনবে এয়ারটেল, স্পেসএক্সের সঙ্গে চুক্তি


প্রেসনোট আন্তর্জাতিক ডেস্ক: এয়ারটেল ভারতের গ্রাহকদের কাছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্সের স্টারলিংকের উচ্চগতির ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দিতে একটি চুক্তি ঘোষণা করেছে। দুই কম্পানির বরাত দিয়ে এনডিটিভি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এয়ারটেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এটি ভারতে স্বাক্ষরিত প্রথম চুক্তি। তবে স্পেসএক্সকে ভারতে স্টারলিংক পরিষেবা বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন পেতে হবে।
এয়ারটেল ও স্পেসএক্স একসঙ্গে কাজ করে এয়ারটেলের খুচরা বিক্রয়কেন্দ্রে স্টারলিংকের সরঞ্জাম সরবরাহ, এয়ারটেলের মাধ্যমে ব্যাবসায়িক গ্রাহকদের স্টারলিংক পরিষেবা দেওয়া, প্রত্যন্ত অঞ্চলের সম্প্রদায়, স্কুল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন সুযোগ অন্বেষণ করবে বলে জানানো হয়েছে।
ভারতীয় টেলিকম প্রতিষ্ঠানটি বিবৃতিতে আরো বলেছে, ‘স্পেসএক্সের সঙ্গে অংশীদারে স্টারলিংক পরিষেবা আনার এই পদক্ষেপ এয়ারটেলের গ্রাহকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি পরবর্তী প্রজন্মের স্যাটেলাইট সংযোগের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির আরেকটি প্রমাণ।’
স্পেসএক্সের মালিকানাধীন স্টারলিংক একটি স্যাটেলাইট ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক, যা বিশ্বব্যাপী মোবাইল ব্রডব্যান্ড পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে।
এটি বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ইন্টারনেটব্যবস্থা ব্যবহার করে প্রত্যন্ত স্থানেও স্ট্রিমিং, ভিডিও কল, অনলাইন গেমিং, রিমোট ওয়ার্কসহ বিভিন্ন সুবিধা নিশ্চিত করে।
এয়ারটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল ভিত্তল বলেছেন, ‘এই অংশীদারি আমাদের ভারতের সর্বদূরবর্তী এলাকাতেও বিশ্বমানের উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা বাড়াবে, যাতে প্রত্যেক ব্যক্তি, ব্যবসা ও সম্প্রদায় নির্ভরযোগ্য ইন্টারনেট সুবিধা পায়। স্টারলিংক এয়ারটেলের পণ্যসম্ভারকে আরো শক্তিশালী করবে, যাতে ভারতের গ্রাহকরা যেখানেই বসবাস বা কাজ করুক না কেন, তারা যেন নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী ব্রডব্যান্ড সুবিধা পেতে পারে।’
অন্যদিকে স্পেসএক্সের প্রেসিডেন্ট ও চিফ অপারেটিং অফিসার গুইন শটওয়েল বলেছেন, ভারতের টেলিকম শিল্পে এয়ারটেল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
তাই স্পেসএক্সের সরাসরি পরিষেবার পরিপূরক হিসেবে তাদের সঙ্গে কাজ করাটা ব্যাবসায়িকভাবে যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা এয়ারটেলের সঙ্গে কাজ করতে ও স্টারলিংকের রূপান্তরকারী প্রভাব ভারতের জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে উদগ্রীব। আমরা প্রতিনিয়ত বিস্মিত হই যখন দেখি, মানুষ, ব্যবসা ও সংস্থাগুলো স্টারলিংকের মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে কী কী অসাধারণ ও অনুপ্রেরণামূলক কাজ করছে।’
প্রতিবেদন অনুসারে, বর্তমানে মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স জিও ভারতের ব্রডব্যান্ড বাজারে শীর্ষে রয়েছে, যার এক কোটি ৪০ লাখের বেশি ওয়্যার্ড ব্রডব্যান্ড গ্রাহক রয়েছে। একই সঙ্গে জিওর প্রায় ৫০ কোটি মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছে।
এয়ারটেলেরও প্রায় ৩০ কোটি ব্রডব্যান্ড গ্রাহক রয়েছে।
তবে টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলোর উদ্বেগ রয়েছে, দুই হাজার কোটি ডলারেরও বেশি ব্যয়ে স্পেকট্রাম কিনেও তারা এখন ইলন মাস্কের স্টারলিংকের কারণে গ্রাহক হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। কারণ স্যাটেলাইট প্রযুক্তি দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে।
দেশে ফিতরা জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২৮০৫ টাকা


প্রেসনোট নিউজ ডেস্ক : এবার দেশে সাদাকাতুল ফিতরা প্রদানের হার জনপ্রতি সর্বনিম্ন ১১০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ২ হাজার ৮০৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় সাদাকাতুল ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জাতীয় সাদাকাতুল ফিতরা নির্ধারণ কমিটির সভাপতি ও বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মাওলানা মুফতি আবদুল মালেক।
সভায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, ইসলামী শরীয়াহ মতে, আটা, যব, কিসমিস, খেজুর ও পনির ইত্যাদি পণ্যগুলোর যে কোন একটি দ্বারা ফিতরা প্রদান করা যায়। গম বা আটা দ্বারা ফিতরা আদায় করলে অর্ধ সা’ বা ১ কেজি ৬শ’ ৫০ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১১০ (একশ দশ) টাকা প্রদান করতে হবে। যব দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩ শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ৫৩০ (পাঁচশ ত্রিশ) টাকা, খেজুর দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩ শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৩১০ (দুই হাজার তিনশ দশ) টাকা, কিসমিস দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ১ হাজার ৯৮০ (এক হাজার নয়’শ আশি) টাকা ও পনির দ্বারা আদায় করলে এক সা’ বা ৩ কেজি ৩ শ’ গ্রাম বা এর বাজার মূল্য ২ হাজার ৮০৫ (দুই হাজার আটশ পাঁচ) টাকা ফিতরা প্রদান করতে হবে।
দেশের সকল বিভাগ থেকে সংগৃহীত আটা, যব, খেজুর, কিসমিস ও পনিরের বাজার মূল্যের ভিত্তিতে এই ফিতরা নির্ধারণ করা হয়েছে। মুসলমানগণ নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী উপযুক্ত পণ্যগুলোর যে কোন একটি পণ্য বা এর বাজার মূল্য দ্বারা সাদাকাতুল ফিতরা আদায় করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, উপর্যুক্ত পণ্যসমূহের স্থানীয় খুচরা বাজার মূল্যের তারতম্য রয়েছে। তদানুযায়ী স্থানীয় মূল্যে পরিশোধ করলেও সাদাকাতুল ফিতরা আদায় হবে।
সভায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড অব গভর্নরসের গভর্ণর মাওলানা সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, ড. খলীলুর রহমান মাদানী, মাওলানা শাহ মোঃ নেছারুল হক, শায়খ যাকারিয়া (রা.) রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক মুফতি মিজানুর রহমান সাইদ, ইসলামি আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীন অধ্যাপক ড. ওয়ালিউল্লাহ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব (মহাপরিচালক রুটিন দায়িত্ব) মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার, মুহাম্মদ জালাল আহমদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, মুফাসসির ড. মাওলানা মুহাম্মদ আবু সালেহ পাটোয়ারী, পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী, দ্বীনী দাওয়াত ও সংস্কৃতি বিভাগের উপ-পরিচালক মাওলানা মোঃ জাকির হোসেনসহ বিশিষ্ট ওলামায়ে-কেরামগণ উপস্থিত ছিলেন।